বাড়ির অমতে অন্য একটি ছিলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ায় এবং বারবার মেয়েকে নিষেধ করলেও তা না মানায় নিজের মেয়েকেই চলন্ত ট্রাকের মধ্যে গলায় নাইলনের দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করলেন বাবা। মৃত্যু নিশ্চিত করতে আঘাত করা হয় মাথাতেও। এরপর ২নং জাতীয় সড়কের ধারে মেয়ের মৃতদেহ ফেলে দিয়ে চম্পট দিয়েছিলেন বাবা ৬৭ বছরের মহম্মদ মুস্তাফা এবং তাঁর ছেলে মহম্মদ জাহিদ। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার পুলিশ তদন্তে নেমে অবশেষে মঙ্গলবার গ্রেফতার করেছে ঘাতক বাবা ও দাদাকে। মঙ্গলবার তাদের বর্ধমান আদালতে তোলা হয়।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগষ্ট সকালে জামালপুর থানার নবগ্রামের ময়না এলাকায় ২নং জাতীয় সড়কের ধার থেকে এক অজ্ঞাত পরিচয় যুবতীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর পুলিশ তদন্তে নামে। মৃতের দুই পায়ে মেহেন্দী দিয়ে ৪টি ফোন নম্বার এবং করণ নাম লেখা ছিল। সেই ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ পৌঁছায় মহারাষ্ট্রে জরীর কাজ করা করণ কুমারের কাছে। তার কাছ থেকে যুবতীর পরিচয় মেলে। বিহারের মুজফফররপুর জেলার চকআলহাদাদ এলাকার বাসিন্দা বছর পঁচিশের জাহানা খাতুনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কও ছিল বলে জানায়।

এরপরই তদন্তে উঠে আসে রোমহর্ষক কাহিনী। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে – জাহানার এই প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি বাবা মহম্মদ মুস্তাফা। প্রেমের সম্পর্ক ছিন্ন করতে তাকে তার মাসির বাড়িতে শিকল দিয়ে বেঁধেও রেখে দেওয়া হয়েছিল কিছুদিন বলে অভিযোগ। কিন্তু তারপরেও গোপনে সে সম্পর্ক রাখায় তাকে গত ২৯ আগষ্ট কলকাতায় নিয়ে আসেন বাবা ও দাদা। মহম্মদ মুস্তাফা ও তাঁর ছেলে মহম্মদ জাহিদ কলকাতায় বেনিয়াপুকুর এলাকায় থাকেন। ট্রাকের ব্যবসা রয়েছে তাঁদের। এরপর ৩০ আগষ্ট রাতে জাহানাকে নিয়ে বাবা ও দাদা বেড়িয়ে পড়েন ট্রাকে নিয়ে। কলকাতা থেকে জাতীয় সড়ক দিয়ে বর্ধমানের দিকে আসার পথে নবগ্রামের কাছে তাকে পিছন থেকে নাইলনের দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তার মাথায় ও শরীরের নানান জায়গায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাতও করা হয়। এরপরই তার মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয় জাতীয় সড়কের পাশে।

Like Us On Facebook