পুরুলিয়ার প্রশাসনিক বৈঠক করতে গিয়ে সেখানকার হুড়া ও বলরামপুর ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের দুর্নীতি নিয়ে রীতিমত সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। ভূমি দফতরে দালাল রাজ কায়েম এবং সাধারণ মানুষের হয়রানির প্রমাণ তুলে ধরে রীতিমত সমঝে দিয়েছিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের যে, তিনি সব খবর রাখেন। আর পুরুলিয়ার ঘটনার জেরে এবার রীতিমত সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণ করল পূর্ব বর্ধমান জেলা। বুধবার থেকে জেলার সমস্ত ভূমি দফতরের অফিস- ব্লক, মহকুমা এবং জেলা সদর দফতরে চালু করা হল হেল্প ডেস্ক।
বুধবার বর্ধমানের রাজবাটিতে জেলা ভূমি দফতরে এই হেল্প ডেস্কের উদ্বোধন করলেন জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা। তিনি জানিয়েছেন, ভূমি দফতরে আসা সাধারণ মানুষকে সহায়তা দিতেই এই হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়েছে। গোটা জেলা জুড়েই সমস্ত বিএলআরও অফিসেও একইসঙ্গে চালু হচ্ছে এই হেল্প ডেস্ক। সাধারণ মানুষ তাঁদের জমিজমা সংক্রান্ত যে কোন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন এই হেল্প ডেস্ক থেকে। এর ফলে তাঁদের হয়রানি কমবে। একইসঙ্গে বহিরাগতদের খপ্পরে তাঁদের পড়তে হবে না। জেলাশাসক জানিয়েছেন, জেলায় যে সমস্ত বাংলা সহায়তা কেন্দ্রগুলি (বিএসকে) রয়েছে সেখানেও জমি জমা সংক্রান্ত বিষয়ে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। এই পরিষেবাকে আরও উন্নত করা হচ্ছে বিএসকেগুলিতে।
জানা গেছে, জুন মাসের মাঝামাঝি নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী পূর্ব বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসতে পারেন। আর তাই প্রশাসনিক মহলে শুরু হয়েছে জোর তৎপরতা। পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও ব্লক ভূমি দফতরগুলিকে ঘিরে যে দালাল রাজ কায়েম রয়েছে তা নিয়ে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রী আসার আগে যাতে বর্ধমানের ভূমি দফতর নিয়ে কোন প্রশ্ন না ওঠে সেজন্য এই হেল্প ডেস্ক চালু করা হল বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। যদিও ভূমি দফতর থেকে দালাল রাজকে হঠাতে এই হেল্প ডেস্ক বিশেষ ভূমিকা নেবে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ। জানা গেছে, এরই পাশাপাশি পুরুলিয়া থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্ধমান জেলাতেও ভূমি দফতর এলাকার বিভিন্ন দোকান, জেরক্স সেণ্টার এবং সাইবার কাফেগুলিতেও প্রশাসনিক নজরদারি শুরু হচ্ছে – যাতে সেখান থেকে কোনরকম অবৈধ কারবার চালানো না যায়।