রাজ আমলের প্রথা মেনেই বৃহস্পতিবার বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মায়ের ঘট উত্তোলন ও প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়েই বর্ধমানে আনুষ্ঠানিকভাবে শারদ উৎসবের সূচনা হল। মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদে রূপোর ঘটে কৃষ্ণসায়ের থেকে জল ভরে ঘোড়ার গাড়িতে করে ঘট নিয়ে বাদ্যযন্ত্র সহকারে শোভাযাত্রা করে মন্দিরে আনা হয়। কোভিড বিধি মেনে এদিনের ঘট উত্তোলন উপলক্ষ্যে শোভাযাত্রায় ভক্তরা অংশ নেন। কৃষ্ণসায়রের চাঁদনী ঘাট থেকে ঘটে জল ভরা হয়, এরপর এই ঘট প্রতিষ্ঠা করা হয় মায়ের মন্দিরে।
১৭০২ সালে স্বপ্নাদেশ পেয়ে চুনুরীদের কাছে থাকা দামোদর নদের পার থেকে উদ্ধার করে দেবী সর্বমঙ্গলাকে বর্ধমানের মহারাজ কীর্তিচাঁদ মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। তখন থেকেই বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা সর্বমঙ্গলা। প্রবেশ পথে তিনটি স্তরে পোড়া মাটির মূর্তি। মুল মন্দিরের সামনে নাট মন্দির। দক্ষিণের প্রবেশ পথ দিয়ে ঢুকে দু’ধারে দুটি শিব মন্দির। প্রতি বছর চিরাচরিত প্রথা মেনে মহালয়ার পরে প্রতিপদে দেবীর ঘট তোলা হয়, আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কোভিড বিধি মেনে ভক্তসমাগমের মধ্যে, শোভাযাত্রা সহকারে, ঢাক, ব্যান্ড বাজিয়ে এক্কা গাড়িতে করে গিয়ে কৃষ্ণসায়র থেকে রুপোর ঘটে জল ভরে এনে দেবীর ঘট প্রতিষ্টা হল। ৯ দিন ধরে চলবে মায়ের পুজো। তার সাথে চণ্ডীপাঠ। এছাড়াও বছরের প্রতিদিনই নিয়ম মেনে দেবীর পুজা হয়। দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয়। দেবী কষ্টিপাথরের, অষ্টাদশভূজা সিংহবাহিনী। রুপোর সিংহাসনে মা আসীন। আগে সন্ধি পুজোয় কামান দাগা হতো। মেষ, মহিষ ও ছাগ বলি হতো। বর্তমানে আর হয় না। সন্ধিপুজোয় কামানের আওয়াজ শুনে আশেপাশের সমস্ত জমিদার বাড়িতে সন্ধিপুজো শুরু হতো। নবমিতে হয় নব কুমারি পুজো। স্বাভাবিক ভাবে সর্বমঙ্গলা মায়ের পুজোকে ঘিরে আনন্দে মতোয়ারা বর্ধমানবাসী। সকাল থেকেই মহিলারা নতুন পোশাকে এদিন হাজির হন সর্বমঙ্গলা মায়ের মন্দিরে।