শুশুনিয়া, গড়পঞ্চকোটের পর এবার আগুনের লেলিহান শিখার গ্রাসে আউশগ্রামের বিস্তীর্ণ জঙ্গল। আগুনে ঝলসে গেল হেক্টরের পর হেক্টর বনভূমি। তবে বন্যপ্রাণ সুরক্ষিত রয়েছে বলেই দাবি বনবিভাগের। প্রথমে রবিবার গভীর রাতে আউশগ্রামের অমরপুর অঞ্চলের আদুরিয়া বনবিভাগের অন্তর্গত হেদোগড়ে ও ফাঁড়ি জঙ্গলে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে দেখেন বনকর্মীরা। সারারাত ধরে চলে আগুন নেভানোর কাজ। দমকলের সহযোগিতায় শেষমেষ একপ্রকার সোমবার সকালের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অন্যদিকে আদুরিয়া জঙ্গলের পাশেই বিষ্ণুপুর মৌজার কাঁকসার বনভূমিতে একইভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এদিন সকালে দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।
এর মধ্যেই সোমবার দুপুরে নতুন করে জঙ্গলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে আউশগ্রামের আমজরুলিয়ায়। সোমবার দুপুরে সেখানকার জঙ্গলে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে দেখেন বনকর্মীরা। তাঁরা আপ্রাণ চেষ্টা চালান আগুন নেভানোর। কিন্তু আগুনের স্ফুলিঙ্গ বেশি থাকায় শেষমেষ দমকল বাহিনীকে খবর দেওয়া হয়। তাঁরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কতটা বনভূমি অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে এদিন সকাল থেকে তার পরিমাপ করা হচ্ছে। তাছাড়া বন্যপ্রাণের কোন ক্ষতি হয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খতিয়ে দেখেন পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত বনাধিকারিক সোমনাথ চৌধুরী, পানাগড়ের রেঞ্জার সুভাষ পাল সহ অনান্যরা। তবে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বন দফতরের গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে স্থানীয় একটি সংস্থা। তাঁদের তরফে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে এনিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে বলেই দাবি সংগঠনের। যদিও কোনরকম গাফিলতি হয়নি বলেই জানিয়েছেন পানাগড়ের রেঞ্জার সুভাষ পাল। তিনি জানান, বনভূমিকে রক্ষা করতে সবসময় নজর রাখা হয়। মাঝেমধ্যেই চালানো হয় জোরদার প্রচার। কিন্তু তারপরেও এমন অগ্নিকাণ্ড দুর্ভাগ্যজনক।
বিভাগীয় বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী জানান, আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে। তবে কিভাবে আগুন লাগলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সোমবার সকাল থেকেই জঙ্গল মহলের বাসিন্দাদের সচেতন করতে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। জঙ্গলমহলের নিরাপত্তাও বাড়ানো হচ্ছে।