হু হু করে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। এমতবস্থায় খাবার নষ্ট করার মত বিলাসিতাকে কোনভাবেই আর প্রশ্রয় দিতে চাইছেন না বর্ধমানের প্রায় ২২ হাজার মানুষ। এঁরা কেউ গৃহবধু, কেউ কলেজ ছাত্রী, কেউ চাকুরিজীবী, কেউ ব্যবসায়ী। কিন্তু এঁদের প্রত্যেকেরই একমাত্র লক্ষ্য – কোনোভাবেই খাবার নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। তাই রাত্রি ২টো কিংবা সারাদিনরাত যে কোনো সময়েই উদ্বৃত্ত খাবারের সন্ধান পেলেই তাঁরা ছুটে যাচ্ছেন সেখানে। সংগ্রহ করে নিয়ে যান সেই উদ্বৃত্ত খাবার। আর তা সংগ্রহ করার পর তুলে দিচ্ছেন নিরন্ন মানুষের মুখে সস্নেহে। মূলত এঁরা সকলেই ফেসবুকের মাধ্যমে নিজেদের একত্রিত করেছেন। আর এই সম্মিলিত গ্রুপের নামকরণ করেছেন তাঁরা ‘ফুডিজ ক্লাব’।

এই ক্লাবের সদস্য তথা মূল উদ্যোক্তা মিনাজউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, প্রায় একবছর হল তাঁরা এই ক্লাব গঠন করেছেন। বর্ধমানের প্রায় ৩০টি ক্যাটারার সংস্থা এবং বিভিন্ন মন্দির কমিটির সঙ্গে তাঁরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। খাবার উদ্বৃত্তের খবর পেলেই তাঁদের সদস্যরা সেখানে ছুটে যান। খাবার সংগ্রহ করে বর্ধমান শহরের ভাতছালা কুঁয়েপাড়া, জেলখানা মোড়, বীরহাটা, বর্ধমান স্টেশন এলাকায় যে সমস্ত দুঃস্থ মানুষ আছেন তাঁদের হাতে সেই খাবার তুলে দেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁদের এই কাজের জন্য গোটা রাজ্যে প্রায় ৬৭ হাজার মানুষ ফেসবুকের মাধ্যমে তাঁদের সদস্যভুক্ত হয়েছেন। প্রসঙ্গত, তিনি জানিয়েছেন, মহিলা এবং পুরুষ দুটি ভাগে টিম করেছেন। মহিলাদের যেহেতু অধিক রাতে বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয় তাই অধিক রাতে কোথাও কোন খাবারের সন্ধান পেলে তাঁদের পুরুষ টিম সেখানে তৎক্ষণাৎ হাজির হয়ে যায়। একইসঙ্গে দ্রুততার সঙ্গে সেই খাবার নিরন্ন মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।

তিনি জানিয়েছেন, এই কাজের সুবিধার্থে তাঁরা ইতিমধ্যেই বর্ধমানের স্টেশন ম্যানেজার এবং পূর্ব রেলের ডিআরএমের কাছে স্টেশন এলাকায় একটি জায়গার জন্য আবেদনও করেছেন। তা পেলে তাঁরা একটি ফুড ব্যাঙ্কও তৈরি করবেন। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে এক ব্যক্তির সৌজন্যে ফুডিজ ক্লাব বেশ কিছু খাবারের সন্ধান পায়। সেই খাবার এদিন বর্ধমান স্টেশনের সামনে দুস্থদের হাতে তুলেও দেওয়া হয়। এই কাজে হাজির ছিলেন বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার নভীন কুজুর, বর্ধমান স্টেশন ম্যানেজার স্বপন অধিকারী।




Like Us On Facebook