বৃষ্টির ঘাটতিতে কৃষকদের শঙ্কার মাঝেই কিছুটা স্বস্তি, মাইথন ও পাঞ্চেত জলধারে সঞ্চিত জলের পরিমাণ গড়ে ৬ ফুট করে বেশী। পাঁচ জেলার কৃষকদের সুবিধার্থে আগামী ২৫ জুলাই থেকেই জল ছাড়বে ডিভিসি, সিদ্ধান্ত হল বৈঠকে।
খরিফ মরশুমে দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া, হুগলি ও হাওড়া জেলার কৃষকদের সুবিধার্থে আগামী ২৫ জুলাই থেকে মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়বে ডিভিসি।পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকের সভাকক্ষে বর্ধমান বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার অবনীন্দ্রনাথ সিং -এর সভাপতিত্বে পাঁচ জেলার প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার জানান, চলতি খরিফ মরশুমে পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রায় ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হবে ধরে নিয়েই কৃষকদের সুবিধার্থে ২৫ জুলাই থেকে ডিভিসির জলধারগুলো থেকে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই জল দুর্গাপুর ব্যারাজে পৌঁছাতে ২৭ জুলাই পর্যন্ত লাগবে। তারপর থেকেই জেলার চাষীরা সেচখালগুলি থেকে জল পাবেন। এর ফলে পূর্ব বর্ধমানের ১৯ টি ব্লক সহ পাঁচ জেলার ৪২ টি ব্লক খরিফ চাষের জন্য জল পাবে। প্রাথমিকভাবে ১ লক্ষ ৩০ হাজার একর ফিট জল ছাড়া হবে। পরবর্তী সময়ে চাহিদা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মেহেবুব মন্ডল জানান, চলতি মরশুমে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৫.৯% বৃষ্টির ঘাটতি আছে। গত বছর জুন মাসে যেখানে গড় বৃষ্টি হয় ২২৬ মিলিমিটার মতো সেখানে চলতি বছরে জুন মাসে বৃষ্টি হয়েছে ৬১.৯ মিলিমিটার। জুলাই মাসেও গড় বৃষ্টি ২০২.৫ মিলিমিটারের জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে ১৬৯.৭ মিলিমিটার। যদিও জলাধারগুলোতে পর্যাপ্ত জল মজুত আছে। জেলায় ইতিমধ্যেই ২৫ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে ধান রোপণ করা হয়ে গেছে, অন্যদিকে জেলার প্রায় ৯৮ শতাংশ জমির বীজতলাও তৈরী করা হয়ে গেছে। ফলে আমাদের লক্ষ্য ছিল দ্রুততার সঙ্গে জল ছাড়ার যাতে কৃষকরা তাঁদের ধান চটজলদী রোপণ করতে পারেন।
জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ার জানিয়েছেন, গত মরশুমে মাইথন জলাধারে জল ছিল ৪৬০.৩৩ একর ফুট সেখানে এই বছর এখনও পর্যন্ত জল আছে ৪৬৬.৩৩ একর ফুট। অন্যদিকে পাঞ্চেত জলাধারে গত মরশুমে থাকা ৩৯৯.৮৬ একর ফুট জলের জায়গায় চলতি মরশুমে জল আছে ৪০৬.২০ একর ফুট। অর্থাৎ প্রতিটি জলাধারেই প্রায় ৬ একর ফুট করে বেশী জল মজুত আছে। প্রথম পর্যায়ে ২৫ জুলাই থেকে ১ আগষ্ট পর্যন্ত ১ লক্ষ ৩০ হাজার একর ফুট জল ছাড়া হবে পরবর্তীতে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।