বুধবার পূর্ব বর্ধমান জেলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৮৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৪৬টি প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন। বর্ধমান-আরামবাগ রোডের সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজও শুরু হবে। ৭৮ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা খরচ করে ২৬ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করা হবে। এই রাস্তা সম্প্রসারণ ও সংস্কারের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। কাজ শেষ হলে দক্ষিণ দামোদরের পাশাপাশি হুগলি এবং বাঁকুড়া জেলার বহু বাসিন্দা উপকৃত হবেন। ওইদিন মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার সেন্টারের শিলান্যাস করবেন। ৪ কোটি টাকা খরচ করে ছাত্রাবাস তৈরি হবে চাঁচাই গ্রামে। ইডেন খালের উপর সেতু তৈরীর কাজেরও সূচনা করবেন তিনি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে ৪৮৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন হবে। ৩৫৫ কোটি ৬৩লক্ষ টাকা খরচ করে এই সমস্ত প্রকল্পের কাজ হয়েছে। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ১০০ বেডের কোভিড হাসপাতালের উদ্বোধন হবে। সংস্কার হওয়া ৩৯০টি রাস্তা উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তাদের হাতে পরিষেবা তুলে দেওয়া হবে। বুধবার জেলার ৩ লক্ষ ২৬ হাজার ২৮১জন উপভোক্তাকে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা তুলে দেওয়া হবে। ওইদিন মুখ্যমন্ত্রী নিজে পূর্ব বর্ধমানের ৩০ জন ও পশ্চিমব র্ধমানের ২০ জন উপভোক্তাকে পরিষেবা তুলে দেবেন।একইসাথে পশ্চিম বর্ধমান জেলারও বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করা হবে। পশ্চিম বর্ধমানের আধিকারিক এবং জনপ্রতিনিধিরাও মঞ্চে হাজির থাকবেন। এবারের জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী সবচেয়ে বেশি রাস্তার শিলান্যাস এবং উদ্বোধন করবেন। ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’তে ফোন করে জেলার বাসিন্দারা বেহাল রাস্তা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। সেই রাস্তাগুলি চিহ্নিত করে সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া ‘জল জীবন মিশন’ প্রকল্পের কাজও বিভিন্ন জায়গায় উদ্বোধন এবং শিলান্যাস হবে।
তবে দামোদরের উপর সেতু তৈরি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কিছু ঘোষণা করেন কিনা সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে জেলাবাসী। কৃষক সেতুর বিকল্প হিসেবে তা নির্মাণ নিয়ে বহুদিন ধরেই চর্চা চলছে। এছাড়াও কালনায় ভাগীরথী নদের উপর সেতু নির্মাণের কথা রয়েছে। জমি অধিগ্রহণের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই সেতু নির্মাণ নিয়ে কোনও বার্তা দেন কিনা তা জানতেও জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহ রয়েছে। এই সেতু নির্মাণ হলে পূর্ব বর্ধমানের পাশাপাশি নদীয়া জেলার বাসিন্দারাও উপকৃত হবেন। এদিকে বুধবারের সভা ঘিরে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে বর্ধমানের গোদায়। ইতিমধ্যেই হেলিকপ্টারের ট্রায়াল রান সম্পূর্ণ হয়েছে। দফায় দফায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসাররা। বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল পরিদর্শনে যান পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার, জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা।