২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত নাবালক শিশুকে খুনই করে দিল মুক্তিপণ চাওয়া অপরাধীরা। মর্মান্তিক এই ঘটনায় শুক্রবার সকাল থেকেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে গলসির সাঁকো গ্রামে। বুধবার রাত প্রায় আটটা নাগাদ সাঁকো গ্রামের বাসিন্দা এবং স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য বুদ্ধদেব দলুইয়ের ৯ বছরের ছোট ছেলে সন্দীপ দলুইকে অপহরণ করা হয়। এরপরই সন্দীপের মুক্তিপণ হিসাবে প্রথমে ৫ লক্ষ এবং পরে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। কিন্তু দিনমজুর পরিবারের পক্ষে সেই টাকা দেওয়া সম্ভব ছিল না। বুদ্ধদেব দলুইয়ের স্ত্রী শান্তনা দলুই ৩০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি অপহরণকারীরা।
এদিকে, শিশুপুত্র অপহরণের এই ঘটনার পরই গলসি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। যদিও অপহরণকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছিল পুলিশকে জানালে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হবে শিশুপুত্রকে। বুধবার সন্ধ্যের এই ঘটনায় বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করে তদন্তও শুরু হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতেই পুলিশ মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ গ্রেফতার করে স্থানীয় সাঁকো মেটেপাড়া এলাকার তিনজনকে। ধৃতদের নাম সুব্রত মাঝি (২০) ওরফে বাদশা, বাড়ি সাঁকো ডোম পাড়া। দ্বিতীয় জনের নাম জয়ন্ত বাগ(২০) ওরফে নিরঞ্জন, বাড়ি মেটেপাড়া এবং তৃতীয় জনের নাম মঙ্গলদীপ দলুই(১৮) ওরফে বাবু, বাড়ি সাঁকোর মেটেপাড়ায়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা অপহরণের কথা স্বীকার করে জানান, ওই শিশুপুত্রকে মাদক জাতীয় কিছু খাইয়ে হাত পা বেঁধে স্থানীয় দামোদর সেচ ক্যানেলে তারা ফেলে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতেই সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা তন্নতন্ন করে খোঁজার পর শুক্রবার সকালে সন্দীপের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। আর এরপরেই ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা চড়াও হন অভিযুক্তদের বাড়ি। ভাঙচুর করা হয় তাঁদের বাড়ির জিনিসপত্র। খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামবাসীদের শান্ত করে। পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন ৩ জনকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু হয়েছে। শুক্রবার ৩ জনকেই বর্ধমান আদালতে তোলা হয়।