২০১৪ সালের টেট পাশ করা প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়াকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ালো বর্ধমান শহরের বর্ধমান কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক চত্বরে। প্রার্থীরা জানিয়েছেন, তাঁদের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল এদিন এই ব্যাঙ্কে হাজির হওয়ার জন্য। তাঁদের কাউন্সেলিং এবং নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এদিন তাঁরা যখন দূরদূরান্ত থেকে এখানে এসে জড়ো হন, প্রথমে তাঁদের জানানো হয় এদিন ৭৫০ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। এরপর প্রথম দফায় ১২৫ জনকে ভিতরে ঢুকিয়ে ব্যাঙ্কের গেট ভেতর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর তারপরেই তাঁদের জানানো হয় এদিন আর কাউকেই নিয়োগপত্র দেওয়া হবে না। আর এই ঘোষণার পরই রীতিমত উত্তেজিত হয়ে ওঠেন প্রার্থীরা।
এদিন দুর্গাপুর থেকে আসা সুচিতা ঘোষ জানিয়েছেন, তাঁরা দীর্ঘ ৬ বছর ধরে এই দিনটির জন্য লড়াই করে আসছেন। তাঁদের নোটিশ দিয়ে এদিন ডাকা হয়। অথচ প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের বর্ধমানের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, এদিন আর কাউকেই নিয়োগপত্র দেওয়া হবে না। বাকিদের কবে দেওয়া হবে তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে। সুচিতা জানিয়েছেন, রাজ্যের সমস্ত জেলায় এই কাউন্সেলিং এবং নিয়োগপত্র দেওয়ার কাজ সুষ্ঠভাবে চলছে। এমনকি বুধবারও উর্দু সহ অন্যান্য ভাষার এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের কাউন্সেলিং এবং নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। তাহলে হঠাৎ আজ কেন বন্ধ করার চক্রান্ত চলছে। তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা নিয়োগপত্র হাতে না নিয়ে এখান থেকে যাবেন না। প্রয়োজনে সারারাত ধরে তাঁরা বসে থাকবেন। একইসঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ক থেকে কাউকেই তাঁরা বাইরে বের হতে দেবেন না।
এদিকে, এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। এদিন এই ঘটনা সম্পর্কে বিজেপির শিক্ষা সেলের জেলা কমিটির কনভেনার রাধাকান্ত রায় জানিয়েছেন, আচমকাই এদিন কাউন্সেলিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রাইমারী শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, মেইল এবং মেসেজের মাধ্যমে প্রার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু বুধবারও যে সমস্ত প্রার্থীদের কাউন্সেলিং করা হয়ে গেছে তাঁদের কারও মেসেজ বা ইমেলে কোনো বার্তাই দেওয়া হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের সন্দেহ, এদিনের এই ঘটনার পিছনে অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে। রাধাকান্তবাবু জানিয়েছেন, তাঁরা এই প্রার্থীদের দাবিকে ন্যায্য মনে করছেন। তাই তাঁরাও এই প্রার্থীদের পাশে রয়েছেন। রাধাকান্তবাবু জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসেছে। ফলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন এই কাউন্সেলিং এবং নিয়োগপত্র আচমকাই বন্ধ করে দেওয়ার পিছনে কোনো অভিসন্ধি রয়েছে। এদিকে, এই ঘটনা সম্পর্কে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান অচিন্ত্য চক্রবর্তী সাংবাদিকদের কোনো কথা বলতে চাননি।