উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রায় ২ মাস হল বর্ধমান শহরে চলে এসেছেন চন্দনলাল শ্রীবাস্তব। আর গত ২ মাস ধরেই তিনি গোটা বর্ধমান শহর চষে বেড়াচ্ছেন ‘দুয়ারে ছাতু’ নিয়ে। বস্তুত, বর্ধমান শহরে চন্দনলাল শ্রীবাস্তবের কাজের পদ্ধতি নিয়েই এখন রীতিমত চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। বর্ধমান শহরের ডিভিসি মোড় এলাকায় ১২জনের সংসার চন্দন শ্রীবাস্তবের। উত্তরপ্রদেশ থেকে বর্ধমানে এসেছেন মাত্র ২ মাস। আর এসেই বিহারের ফর্মূলা প্রয়োগ করে রীতিমত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি।
চন্দন শ্রীবাস্তবের রয়েছে একটি ছোট বাইক। সেই বাইকের পিছনের সিটে রয়েছে একটি ডিজেলের ছোট জেনারেটর। জেনারেটরের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে একটি ছোট আটাচাকি মেশিন। গাড়ির সঙ্গে রয়েছে বস্তায় ছোলা ভাজা। আর তা নিয়েই তিনি ছুটে চলেছেন পাড়ায় পাড়ায়। গাড়ির সঙ্গে লাগানো রয়েছে তাঁর ছাতুর প্রচার রেকর্ডিং। সবসময় তা বেজেই চলেছে। যেই চাইছেন তাঁর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে প্রয়োজন মত ছোলা ভেঙে সঙ্গে সঙ্গে ছাতু তৈরী করে দিচ্ছেন।
চন্দনলাল জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশেও তাঁর পারিবারিক পেশা এই ছাতু বিক্রি। কিন্তু সম্প্রতি সেখানে ব্যবসা ঠিক চলছিল না। তাই উত্তরপ্রদেশ থেকে তিনি প্রথমে চলে আসেন বিহারের ভোজপুরে। সেখানেই তিনি দেখেন ছোলা ভেঙে ছাতু তৈরীর ছোট এই মেশিন। দাম পড়েছে ৩৫ হাজার টাকা। এরপর সেখানেই একটি ছোট মোটরবাইক কেনেন। মেশিনকে চালাতে প্রয়োজন বিদ্যুত। তাই কেনেন ছোট জেনারেটর। ব্যস, গাড়ির পিছনের সিটে দু’টিকে বসিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। কিন্তু সেখানেও এই ব্যবসা ভালভাবে জমাতে পারলেন না। আর তারপরই গত ২ মাস আগে তিনি চলে আসেন বর্ধমান শহরে। চন্দনলাল জানিয়েছেন, প্রতিদিন এক থেকে দেড় বস্তা ছোলা ভেঙে ছাতু তৈরী করে তা বিক্রি করছেন তিনি। ১২০ টাকা প্রতি কেজি। দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে চোখের সামনেই মিনিট খানেকের মধ্যেই তিনি তৈরী করে দিচ্ছেন খাঁটি ছাতু। তাই দাম একটু বেশি হলেও এতে কোন ভেজাল নেই। এরই মাঝে তিনি তাঁর মোবাইল ফোনের নাম্বারও শেয়ার করছেন। কারও প্রয়োজন হলে মোবাইল ফোনে তাঁকে ডাকলেই হাজির ‘দুয়ারে ছাতু’। চন্দনলাল জানিয়েছেন, গড়ে প্রতিদিন এখন তাঁর ৫০০-৬০০ টাকা আয় হচ্ছে। সকাল থেকে বিকাল তিনি ছুটে চলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, দোকান বা বাজারে যে ছোলার ছাতু পাওয়া যায়, অনেকসময়ই গ্রাহকরা তাতে ভেজাল আছে কি নেই তা নিয়ে সন্দেহের মধ্যে পড়েন। কিন্তু তাঁর কাছে ভেজালের নামগন্ধই নেই। চোখের সামনে ছোলা থেকে ছাতু তৈরী করে দিচ্ছেন তিনি। তাই ক্রমশই বাড়ছে জনপ্রিয়তা।