ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর গোটা রাজ্যের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও বিজেপি কর্মী, সমর্থক, নেতৃত্বদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলা হয়েছে বিজেপির একাধিক দলীয় অফিসে। ভাঙচুর করা হয়েছে একাধিক বিজেপির অস্থায়ী অফিসগুলিকে। সবমিলিয়ে রীতিমত আতঙ্কে এখনও গেরুয়া শিবির। এই অবস্থায় বিজেপির জেলা অফিস সহ বিভিন্ন বড় শাখা অফিসগুলিতে আক্রমণ ঠেকাতে মোতায়েন করা হল কেন্দ্রীয় বাহিনী। খোদ বিজেপি নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, তৃণমূলী সন্ত্রাসে কর্মীরা মারধর খেলেও কিংবা তাঁদের বাড়ি ভাঙচুর হলেও কোন রকম তাঁরা সাহায্য পাচ্ছেন না বিজেপির জেলা নেতৃত্ব এমনকি প্রার্থীর কাছ থেকেও। অধিকাংশ বিজেপির জেলা নেতা কার্যতই গা ঢাকা দিয়েছেন। খোদ বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিত তা ফোনই ধরছেন না। এমতবস্থায় জায়গায় জায়গায় বিজেপি নেতা-কর্মীরা বাধ্য হয়েই তৃণমূলে ফিরতে শুরু করেছেন।
রবিবারই বর্ধমানের রায়ান অঞ্চলের ডাঙাপাড়া এলাকার ৪০টি বিজেপি পরিবার তৃণমূলের ছত্রছায়ায় বাড়ি ফিরেছেন। এদিকে, গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে বিজেপির উপর এই হামলার ঘটনায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হল বিজেপির জেলা অফিস এবং শাখা অফিসগুলিতে। বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা কমিটির সম্পাদক শ্যামল রায় জানিয়েছেন, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের খবর অনুযায়ী বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই ব্যবস্থা করেছেন। তিনি জানিয়েছে্ন, বর্ধমান জেলা অফিসে ১২ জনের সশস্ত্র সিআরপিএফের একটি দল ২৪ ঘণ্টা পাহারা দিচ্ছেন। শুধু তাইই নয়, পার্টি অফিসে কারা কারা ঢুকছেন এবং বাধ্যতামূলকভাবে তাঁদের পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তবেই পার্টি অফিসের ভিতর ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।
শুধু জেলা বিজেপি পার্টি অফিসই নয় বর্ধমান শহরের টাউন হল পাড়ায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের জেলা কার্য্যালয় মধুকর ভবনেও একই ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ভবনে থাকা আবাসিকদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে আগে কেন্দ্রীয় বাহিনীর অনুমতি নিতে হচ্ছে। তাঁরা অনুমতি দেওয়ার পরই যাওয়ার ছাড়পত্র মিলছে। মধুকর ভবনে থাকা আরএসএসের সহবিভাগ প্রচারক সৃজন কুমার হাজরাও জানিয়েছেন, চারিদিকে যে ধরণের অশান্তি চলছে তার জন্যই তাঁরাও আশঙ্কা করেছিলেন তাঁদের এই ভবনে হামলা হতে পারে। তাই এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কোন হামলার ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি জানিয়েছেন। অপরদিকে, শ্যামল রায় জানিয়েছেন, জেলা পুলিশ তথা রাজ্য পুলিশের উপর তাঁদের ভরসা আছে। তাঁরাও নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন। কিন্তু যেহেতু কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার বিষয়টি একেবারেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিষয় তাই তাঁরা এব্যাপারে কিছু বলত পারবেন না।