বুদবুদের কোটা গ্রামের ভট্টাচার্য্য পরিবারের কালীপুজো ৩২০ বছরে পদার্পণ করল। ভট্টাচার্য্য পরিবারের দেবী কালী এখানে বড়-মা কালী নামেই পরিচিত। এখানে মা কালীর উচ্চতা ২২ ফুট। পরিবারের সপ্তম পুরুষ, ৮২ বছরের নির্মলেন্দু ভট্টাচার্য্য এখনও মাচা তৈরি করে তার ওপর উঠে নিজেই দেবীর মূর্তি তৈরি করে নিজের হাতেই দেবীর মূর্তি রং করে নিজেই পুজো করেন। তাঁর এই মূর্তি তৈরির কাজে সাহায্য করেন পরিবারের সদস্যরাও।
নির্মলেন্দুবাবু জানিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের পূর্ব পুরুষ মনোহর ভট্টাচার্য্য ৩২০ বছর আগে কাটোয়ায় গঙ্গা স্নান করতে যাওয়ার পথে কাটোয়ার গঙ্গার ধারে অবস্থিত গৌরাঙ্গ ঘাটের পাশে শ্যামা কালীর মন্দির সংলগ্ন ধর্মশালায় স্নান করার পর সেখানেই তিনি বিশ্রাম করছিলেন। সেই সময় তিনি স্বপ্নাদেশ পান। মা কালী স্বপ্নাদেশে তাঁকে জানান, মা কালী তাঁর বাড়িতে গিয়ে পুজো নিতে চান। তিনি একজন গরীব ব্রাহ্মণ তিনি কিভাবে একটা বড় পুজোর আয়োজন করবেন? মনোহরবাবু দেবীকে সেই প্রশ্ন করলে উত্তরে দেবী তাঁকে বলেছিলেন, শুধু পুজোর উদ্যোগ নিতে হবে তাঁকে, বাকি পুজোর ব্যবস্থা মা নিজেই করবেন। এরপর কাটোয়া থেকে কোটা গ্রামে ফিরে মনোহরবাবু তাঁর স্বপ্নাদেশের কথা তিনি পরিবার ও গ্রামের মানুষদের জানান। এরপরই গ্রামেরই এক কারিগর ২২ ফুটের মূর্তি তৈরি করে গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় সাড়ম্বরে পুজোর আয়োজন হয়।
কোটা গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ রায় জানিয়েছেন, এত বড় পুজো পরিচালনায় গ্রামের মানুষজনও অংশগ্রহণ করেন এবং ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের মানুষেরা মা কালীর ভোগ এবং পুজোর সমস্ত জোগাড় করেন। তবে এই পুজোর আয়োজনে কোন মহিলা অংশগ্রহণ করতে পারেন না, দীর্ঘদিন ধরে এই রীতি চলে আসছে এখানে। শোনা যায় দেবীর কাছে কেউ কোন মনস্কামনা করলে তাঁদের মনস্কামনা পূরণ হয়। পুজোর পরের দিন অন্ন ভোগ বিতরণ করার পর রাত্রিবেলায় দেবী প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়।