বর্ধমান শহরের বাহির সর্বমঙ্গলার এক কিশোর ছবি এঁকে বিশ্ব সম্মানে ভূষিত হল। নাম ফরদুন আলি মিদ্যা ওরফে বারিষ। বর্ধমানের বোরহাট রামকৃষ্ণ মিশনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র বারিষ। জন্মের পর থেকে শারীরিক নানাবিধ বাধা অতিক্রম করেও সে যে বিশ্বের বুকে নিজের পরিচয় এভাবে তুলে ধরবে সেকথা স্বপ্নেও ভাবেননি মা আদুরী বেগম ও বাবা মতিন আলি মিদ্যা। এক ছেলে এক মেয়ের সংসারে শুরু থেকেই ছিল নানা প্রতিকূলতা।
আদুরী বেগম জানিয়েছেন, জন্মের পর থেকে প্রায় আড়াই বছর বয়স পর্যন্ত স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল না বারিষ। কিন্তু একদম ছোট থেকেই ছবি আঁকার প্রতি ছিল তার বিশেষ আগ্রহ। তার সঙ্গে ছিল বাবা মতিন আলি মিদ্যার আঁকার প্রতিভা আর মায়ের অনুপ্রেরণা। দুইয়ে মিলে ধীরে ধীরে যত বড় হয়েছে বারিষ, ততই তার ঝোঁক বেড়েছে আঁকায়। আর সেই আঁকাই তাকে এনে দিল বিশ্ব সম্মান। এবছরের এপ্রিল থেকে জুন পরপর তিনমাস ধরে আমেরিকায় পিকাসো আর্ট প্রতিযোগিতায় তাকে ক্যানভাস পিকচার পাঠিয়ে যেতে হয়েছে। অবশেষে শনিবার ই-মেল মারফৎ পরিবার জানতে পারে বারিষ পেয়েছে স্পার্কলিং ডায়মণ্ড আর্টিস্টের শিরোপা। ১১ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের এই প্রতিযোগিতায় গতবছরও সে পেয়েছিল গোল্ডেন প্লাস সম্মান। এবার আরও একধাপ এগিয়ে সে জয় করল ডায়মণ্ড আর্টিস্টের খেতাব।
মা এবং বাবার উৎসাহ ও অনুপ্ররণায় যেভাবে তার প্রতিভা দিন দিন প্রস্ফুটিত হচ্ছে তা দেখে সকলেই বিস্মিত। মঙ্গলবারই বারিষের কাছে এসে পৌঁছেছে পিকাসো আর্ট প্রতিযোগিতার এই বিশ্বমানের খেতাবের সার্টিফিকেট। আদুরী বেগম জানিয়েছেন, এবছর এই বিশ্ব প্রতিযোগিতায় ৩০০টি দেশ এবং ৯৫ লক্ষ প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিল। তার মধ্যে থেকে বারিষের এই কৃতিত্বে তাঁরা রীতিমত আপ্লুত। বর্তমানে বারিষ যাই দেখে তাই সে চোখের পলকে এঁকে দিতে পারে। যে ক্যানভাস চিত্র এঁকে সে ৮.৭ নম্বার পেয়ে এই সম্মান পেয়েছে সেটি হল রাধা ও কৃষ্ণর ছবি। উল্লেখ্য, গতবছর গোল্ডেন প্লাস আর্টিস্ট সম্মান সে পেয়েছিল ভারতের রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের ছবি এঁকে।