শেষ বাসের সময় এগিয়ে নিয়ে আসার প্রতিবাদে জেলা পরিবহণ দপ্তরে বিক্ষোভ দেখালেন বর্ধমানের প্রায় ২৫টি গ্রামের বাসিন্দারা। বিক্ষোভকারীরা এদিন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিবহণ আধিকারিক আবরার আলমের কাছে এই পরিবর্তনের তীব্র প্রতিবাদ করে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবী জানান। অন্যথায় তাঁরা লাগাতার বাস বন্ধেরও হুমকি দিয়েছেন।
বর্ধমানের বণ্ডুল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা মধুসূদন ব্যানার্জী, খোকন মাঝি, প্রভাত চক্রবর্তী, তন্দ্রা ধারা সহ আন্দোলনরত গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, বর্ধমান থেকে মন্তেশ্বরের বামুনপাড়া, ভায়া হাটগোবিন্দপুর, বণ্ডুল রুটের শেষ বাসটি রাত ৮ টা ২০ মিনিটে ছাড়ত। কিন্তু বাস মালিকদের মধ্যে বিরোধের জেরে আচমকাই রুটের এই শেষ বাসটিকে তুলে নেওয়া হয়। ফলে চূড়ান্ত ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন এই রুটের বাস যাত্রীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, বাসটি বর্ধমান শহর ছেড়ে হাটগোবিন্দপুর, বাকলসা, বন্ডুল, নেড়াগোয়ালিয়া, মালম্বা, কুসুমগ্রাম, মন্তেশ্বর হয়ে বামুনপাড়া পর্যন্ত যেত। কিন্তু হঠাই মাস তিনেক আগে বাসের সময় এগিয়ে নিয়ে এসে ৬ টা করে দেওয়া হয়েছে। এতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ওই বাসের যাত্রা পথের প্রায় ২৫-৩০ টি গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই সমস্ত একালাগুলি থেকে প্রচুর সংখ্যক মানুষ পেশা এবং পড়াশুনার জন্য বর্ধমান শহরে আসেন। এমনকি শহর হয়ে অন্য জেলা ও কলকাতায়ও যান অনেক নিত্যযাত্রী। তাঁদের কর্মস্থল থেকে অথবা পড়াশুনা করে ফিরতে রাত হয়ে যায়। সেই হিসাবে তাঁরা প্রত্যেকেই রাত ৮ তা ২০ মিনিটের বাসে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিতেন। কিন্তু সময় পরিবর্তন করে বাসটিকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা এগিয়ে নিয়ে আসায় তাঁদের সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তাই অনেক সময় স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম সহ বিভিন্নস্থানে তাঁদের রাত কাটাতে হচ্ছে বলে এদিন অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারীরা।
এই সমস্যার কথা জানিয়ে গ্রামবাসীরা সম্মিলিতভাবে এবছরের ৩০ মার্চ বন্ডুল ১ নং গ্রাম পঞ্চাতের প্রধানকেও জানিয়েছেন। প্রধান গ্রামবাসীদের কাছ থেকে আবেদন পাওয়ার পর বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য জেলা পরিবহণ আধিকারিককে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। এদিন, জেলা পরিবহণ আধিকারিককে তাঁদের সমস্যার কথা জানানোর পর আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, পরিবহণ আধিকারিক তাঁদের সমস্যা দ্রুত মেটানোর জন্য উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন। দ্রুত সমস্যা না মিটলে ওই রস্তায় অন্য কোনও বাস চলতে দেবেন না বলেও এদিন আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারী দিয়েছেন।
এদিকে, এব্যাপারে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিবহণ আধিকারিক আবরার আলম জানিয়েছেন, সমস্যার কথা তিনি জেনেছেন। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথাও বলেছেন এদিন। তিনি জানান, ওই বাসটির মালিকের আবেদনের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট শুনানির মাধ্যমেই পরিবহণ বোর্ড বাসের সময় পরিবর্তনের জন্য সম্মতি দিয়েছে। কিন্তু যাত্রীদের মধ্যে থেকে এই বিষয়ে আপত্তি আসছে। আপত্তির কথা পরিবহণ বোর্ডে জানানো হবে। আশা করা যাচ্ছে পঞ্চায়েত ভোটের পর নিয়ম মেনেই পরিবহণ বোর্ড নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেবে। যদিও পঞ্চায়েত ভোট পর্যন্ত এই সমস্যা জিইয়ে রাখার বিরোধিতা করেছেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, দ্রুত এই শেষ বাসটি চালু করা না হলে তাঁরা বর্ধমান কৃষ্ণনগর রুটের সমস্ত বাস চলাচলই বন্ধ করে দেবেন।