৩১ আগস্ট আইন অমান্য কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে সিপিএম সমর্থকদের ভাঙচুর ও হাঙ্গামার ঘটনায় জেল বন্দি ৪৬ জন সিপিএম সমফর্থককে মঙ্গলবার জামিন দিল আদালত। মঙ্গলবার দুপুর থেকেই বর্ধমানের সিজেএম আদালতে এই জামিনের খবর পেতেই সিপিএম সমর্থকদের ভিড় উপচে পড়ে। হাজির হয়ে যান সিপিএমের জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন, জেলা কমিটির সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় সহ একাধিক নেতা-কর্মীরা। এদিন সৈয়দ হোসেন জানিয়েছেন, তৃণমূল সরকারের আমলে দুর্নীতি, স্বজনপোষণ সহ নানান দুর্নীতি সহ একাধিক দাবিতে তাঁরা আইন অমান্য আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু কোন প্ররোচনা ছাড়াই পুলিশ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সিপিএম সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনায় পুলিশ ও তৃণমূল যৌথভাবে দুটি পৃথকভাবে মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় এদিন সকলেরই জামিন হয়েছে। সৈয়দ হোসেন জানিয়েছেন, এই জামিনের ফলে এটা প্রমাণিত হল যে পুলিশ এবং তৃণমূল তাঁদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছিল।
এদিন বিকেলে আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর কার্যতই বীরের সম্মান দিয়ে নেতাদের ফিরিয়ে নিয়ে যান দলীয় কর্মী সমর্থকরা। উল্লেখ্য, জেল বন্দি থাকা অবস্থাতেই এসএফআইয়ের জেলা সম্মেলনে কাটোয়ায় পুনর্নিবাচিত হয়েছেন অনির্বাণ রায়চৌধুরী। এদিন তাঁকেও জামিন দেওয়া হয়। জামিন পেয়েছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আভাষ রায়চৌধুরীও। এদিন সৈয়দ হোসেন জানিয়েছেন, এই ঘটনায় তাঁদের আন্দোলন আরও তীব্র হচ্ছে। জেলাস্তরে যে উত্তাপ ছড়িয়েছে তা এবার নিচুতলায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। জেলার সমস্ত পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ, ডেপুটেশন শুরু হচ্ছে। চলবে প্রতিটি এলাকায় এলাকায় আইন অমান্য আন্দোলন। তিনি জানিয়েছেন, সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর সেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফের ভোট লুঠ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে রাজ্যের শাসকদল। কিন্তু তাঁরা তা কিছুতেই হতে দেবেন না। আর তাই বামপন্থীরা ফের দুর্নীতি, স্বজনপোষণ সহ একাধিক দাবিকে সামনে রেখে আরও জোড়ালো আন্দোলনে নেমেছে।
এদিকে, সোমবার থেকেই বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের নেতৃত্বে কার্জন গেটের সামনে শুরু হয়েছে সমাজের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ। সোমবার আদালতের আইনজীবী, অধ্যাপক, শিক্ষক প্রমুখরা সিপিএমের আইন অমান্য আন্দোলনের নামে ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা করেন। মঙ্গলবারও এই মঞ্চ থেকে সেদিনের সিপিএমের ভাঙচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানান মহিলারা। সেইদিনের ঘটনার বিরুদ্ধে একদিকে যখন তৃণমূলের উদ্যোগে অবস্থান বিক্ষোভ, নিন্দা ও ধিক্কার জানানো হচ্ছে সেই সময় আদালত থেকে জামিন পেয়ে বীরের সম্মানে সিপিএম নেতাদের ফিরিয়ে নিয়ে গেল সিপিএম সমর্থক ও নেতারা। আদালত সুত্রে জানা গেছে, জামিন পাওয়া নেতাদের সপ্তাহে দু’দিন নিজ নিজ থানায় হাজিরা দেওয়া এবং থানা এলাকা না ছাড়ার শর্ত দেওয়া হয়েছে।