কয়েকদিন আগেই বর্ধমান ডিভিশনের কমিশনার হরি রামালু বর্ধমানে বৈঠক করতে এসে জানিয়ে গেছিলেন ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে ডিভিসি কর্তৃপক্ষের আলোচনা হয়েছে। রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে তাঁরা জল ছাড়বেন না। এদিকে, এই পরিস্থিতির মধ্যেই মঙ্গলবার সকাল থেকে দফায় দফায় ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়তে থাকায় রীতিমত উদ্বেগ সৃষ্টি হল পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে।
এদিন সন্ধ্যেয় ফের ডিভিসি থেকে ১ লক্ষ ১০ হাজার ৩৪৯ কিউসেক হারে জল ছাড়া হল। যদিও এদিন এই জল ছাড়ার বিষয়ে জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। গোটা জেলায় এখনও কোন বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। এদিন জেলা কৃষি দপ্তরের যুগ্ম কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এবছর খরিফ মরশুমে এখনও পর্যন্ত চাষ হয়েছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে। সোমবার পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রায় ২৩ হাজার হেক্টর জমি প্লাবিত হয়েছে। যদিও মঙ্গলবার এই পরিমাণ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অপরদিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলার আরও বেশ কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। বর্ধমান -১ এর বিদ্যাসাগর পল্লী, ডাঙাপাড়া, মালিরবাগান, পালিতপুরের বেশ কিছু এলাকা বৃষ্টির জমা জলে প্লাবিত হয়েছে। বর্ধমান শহরের ৪নং ওয়ার্ডে বৃষ্টির জমা জলে বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এজন্য ত্রাণ শিবিরও খোলা হয়েছে স্থানীয় কাউন্সিলরের উদ্যোগে। বর্ধমানের বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বহু চাষের জমি প্লাবিত হওয়ায় এদিনই জেলা পরিষদের সদস্য নুরুল হাসান, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মফিজুল রহমান প্রমুখরা প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখেন। নুরুল হাসান জানিয়েছেন, বেলকাশ অঞ্চলের ৯টি মৌজার প্রায় ২০টি গ্রামের চাষের জমি জলের তলায় রয়েছে। বর্ধমান জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের আধিকারিক বামদেব কুণ্ডু জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃষ্টির প্রকোপ কমে যাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে। বহু জায়গা থেকেই জল দ্রুত নামছে। যদিও তিনি জানিয়েছেন, পূর্ব বর্ধমান জেলার কমবেশী প্রতিটি ব্লকেই ত্রিপল দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। এদিনই কালনা মহকুমায় ৫ হাজার ত্রিপল পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, রাত ১০ টায় ডিভিসির জল ছাড়ার পরিমাণ বেড়ে ১ লক্ষ ৫২ হাজার ৯৭৫ কিউসেক হয়েছে। সেই সঙ্গে জারি করা হয়েছে লাল বিপদসঙ্কেত (রেড অ্যালার্ট)।