প্রথম কন্যা সন্তান হওয়ায় এক গৃহবধুকে খাটের সঙ্গে হাত বেঁধে কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি কালনা মহকুমার নাদনঘাটের ইসলামপুর এলাকায়। মৃত গৃহবধুর নাম মাসুরা খাতুন (১৯)।
মৃতের বাবা সরিফুদ্দিন সেখ জানিয়েছেন, প্রায় ২ বছর আগে সোনাদানা সহ একটি মোটরবাইক যৌতুক দিয়ে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন ইসলামপুরের বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর রফিকুল মণ্ডলের সঙ্গে। এক বছর আগে তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্মায়। আর এর পর থেকেই শুরু হয় মেয়ের উপর অত্যাচার এবং গঞ্জনা। তিনি জানিয়েছেন, এই অত্যাচারের জেরে মাসুরা শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলেও আসতে চেয়েছিলেন বার কয়েক। কিন্তু তাঁরাই তাঁকে বুঝিয়ে শ্বশুরবাড়িতে পাঠান।
সরিফুদ্দিন সেখ জানিয়েছেন, তাঁরা মাসুরার শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের সঙ্গে এব্যাপারে কথাও বলেন। কিন্তু তারপরেও অত্যাচার চলতে থাকে। ইতিমধ্যেই মাসুরার এক ননদাই মাসুরার হাত দেখে বিধান দেন, মাসুরার পরবর্তীকালে যতগুলি সন্তানই হোক না কেন তা সবই মেয়ে হবে। আর এরপরই অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায়। তার জেরেই সোমবার সকালে মাসুরাকে ঘরের মধ্যে খাটের সঙ্গে তার হাত বেঁধে তার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন শ্বশুর সামসুল মণ্ডল, শাশুড়ী আকলি বিবি, স্বামী রফিকুল মণ্ডল এবং দেওর আনারুল মণ্ডল। পাড়া প্রতিবেশীরা তার আর্ত চিৎকারে ছুটে আসেন। এরপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সোমবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনায় নাদনঘাট থানায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন এই ঘটনায় অভিযুক্ত শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে ফাঁসির শাস্তি চেয়েছেন।