মঙ্গলবার থেকে রাজ্যের মধ্যে প্রথম পূর্ব বর্ধমান জেলায় চালু হল ‘উত্তরণ’ প্রকল্প। পুঁথিগত বিদ্যার বাইরে পড়ুয়াদের সমাজজীবন সম্বন্ধে সচেতন ও ভবিষ্যতের সুনাগরিক গড়ার লক্ষ্য নিয়েই প্রায় এক বছর আগে বর্ধমানের তৎকালীন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন গোটা রাজ্যের মধ্যে বর্ধমান জেলায় প্রথম শুরু করেন এডুকেশন মনিটরিং কমিটি। একদিকে, স্কুলের পঠন পাঠনের মান উন্নয়ন এবং অন্যদিকে, স্কুলের পরিকাঠামোর মান উন্নয়নকে তুলে ধরার জন্য শুরু হয় লাগাতার স্কুল অভিযান। ফলও মেলে হাতেনাতে। দেখা যায় বহু স্কুলেই শিক্ষকরা গড়হাজির। আবার নিয়ম মেনে স্কুল খোলা বা বন্ধই হয়না অনেক জায়গায়। মিড ডে মিল নিয়েও উঠে আসে নানাবিধ অভিযোগ। আর এবার এর সঙ্গে যুক্ত হল ‘উত্তরণ’ প্রকল্প।
প্রথম দফায় পূর্ব বর্ধমান জেলার ৬৯টি হাইস্কুলকে বাছাই করে পূর্ব বর্ধমান জেলার ৬৯ জন প্রশাসনিক আধিকারিককে একটি করে স্কুলের মানোন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া হল। রাজ্য সরকারের কোনো নির্দেশাবলী নয়, নেহাতই রাজ্যের মধ্যে প্রথম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের নিজস্ব এই উদ্যোগ এদিন গ্রহণ করা হয়েছে। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন,ধারাবাহিক যে পঠন পাঠন তা চলবেই। তার সঙ্গে প্রশাসনিক আধিকারিকরা নিজেদের মত করে স্কুলগুলির সামগ্রিক মানোন্নয়নের জন্য চেষ্টা করবেন। ছাত্রছাত্রীদের সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য এবং কেরিয়ার কাউন্সেলিং-এর বিষয়টিও যাতে চালু করা যায় তা তাঁরা খতিয়ে দেখবেন। এছাড়াও সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কাজ কিভাবে হয়, কিংবা পুলিশ থানা ভীতি দূর করতে ছাত্রছাত্রীদের এই সমস্ত এলাকা ভিজিট করানোও এই উত্তরণের অঙ্গ হিসাবে দেখা হচ্ছে।
এদিন বর্ধমান সংস্কৃতির অ্যানেক্স হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বর্ধমান জেলা সর্বশিক্ষা প্রকল্পাধিকারিক শারদ্বতি চৌধুরী জানিয়েছেন,বিশেষ করে নবম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের নেট ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা, ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রভৃতি সম্পর্কেও আলাদা করে যাতে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়। কিংবা বিজ্ঞানের নানাদিক সম্পর্কেও যাতে তাদের আগ্রহ বাড়ানো যায় তাও দেখা হবে উত্তরণের এই কর্মসূচিতে। তিনি জানিয়েছেন, প্রতি ১৫দিন অন্তর আধিকারিকরা তাঁদের স্কুলগুলিকে পরিদর্শন করবেন। এরপর তা নিয়ে তাঁরা আলোচনা করবেন। এরপর স্কুলগুলির মান নিয়েও তাঁরা প্রতিযোগিতা মূলক অনুষ্ঠান করবেন। স্কুলের ক্লাসভিত্তিক টীম তৈরী করে তাদের মধ্যে বিতর্ক, তাৎক্ষণিক ব্ক্তৃতা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের মানোন্নয়ন করার চেষ্টা হবে। তিনি জানিয়েছেন, পড়াশোনার চাপ ও ভীতি দূর করার জন্য ধারাবাহিকভাবে ছাত্রছাত্রীদের মেডিটেশনের ওপর জোড় দেওয়া হয়েছে।