বর্ধমান শহরের ভিতর দিয়ে বাস চালানো নিয়ে ফের আইআইটি খড্গপুরের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সার্ভের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। একইসঙ্গে আধুনিক বর্ধমান গড়ার লক্ষ্যে বর্ধমান শহরে গ্রীণ বাস এবং ইলেকট্রিক বাস চালুর উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পাঁচ দিনের মাথায় মঙ্গলবার বর্ধমান শহরের পরিবহণ সমস্যা এবং যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্যের পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠকে হাজির ছিলেন জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু, জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব, জেলা পুলিশ সুপার কুণাল আগরওয়াল পুরপতি ডা. স্বরূপ দত্ত সহ পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিক, এসবিএসটিসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর শুভেন্দু বসু, জেলা ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতির প্রতিনিধি সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরাও।
এদিনের বৈঠকের পর পরিবহণ সচিব জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে জেলা ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতির পক্ষ থেকে পরিবহণ সমস্যা এবং যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়। মুখ্যমন্ত্রী সাত দিনের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসার নির্দেশ দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এদিন সকল পক্ষকে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বাম আমলে বর্ধমান শহরকে যানজট মুক্ত করার জন্য আই আই টি খড়্গপুরকে দিয়ে যে সমীক্ষা করা হয় এবং তাঁদের যে সুপারিশ ছিল তা মেনেই শহরের দুই প্রান্তে দুটি বাস টার্মিনাস করা হয়। একইসঙ্গে শহরের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন রুটের বাস পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। শহরের টোটো সমস্যা সহ যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য সুনিশ্চিত করতেও জেলাশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপারকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। আলাপনবাবু জানিয়েছেন, বর্তমানে শহরের মধ্যে দিয়ে টাউন সার্ভিস মিনিবাস চলে ১মিনিট ২২ সেকেণ্ড অন্তর। তা সত্ত্বেও আগামী কয়েকমাসের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে সরকার পরিবহণ দপ্তরের মাধ্যমে ৩০ সিটের ৪টি নতুন অত্যাধুনিক মিনিবাস চালাবে এই দুটি বাস টার্মিনাসের মধ্যে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই তা চালু হবে। কয়েকমাস পর তা পর্যালোচনা করা হবে। এছাড়াও শহরের ছোট রাস্তা দিয়ে স্কুলবাসের জন্য ছোট বাস চালু করার জন্য স্কুলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হবে। বর্তমানে শহরের জিটিরোড দিয়ে স্কুলবাস চলাচল করলেও শহরের ভিতর ছোট রাস্তায় তা বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে এদিনের বৈঠকে। তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন গ্রীন বাস সার্ভিস চালু করার জন্য। তাই নতুন করে ফের আইআইটি খড়্গপুরের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে বর্ধমান শহরের এই পরিবহণ ব্যবস্থার একটি সার্ভে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের সুপারিশ আসার পরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়াও বর্ধমান শহরেও অন্যান্য শহরের মত গ্রীন বাস(সিএনজি) এবং ইলেকট্রিক বাস চালু করারও চেষ্টা করছে রাজ্য পরিবহণ দপ্তর। এরই পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা যে বাস পরিষেবার দাবি জানিয়েছিল তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেমন চাইবেন সেভাবেই এসবিএসটিসি বাস পরিষেবা দেবে।