অনেক সময় বয়স্করা আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা হোক বা অন্য কোনও অভিযোগ জানাতে থানায় হাজির হতে পারেন না। ফোনে অভিযোগ করলেও গুরুত্ব দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়াও অনেকে সরাসরি পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানাতে চান। সব সময় তা সম্ভব হয় না জেলাবাসীর। আরজি করে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরে পুলিশ সুপারের দফতরের সঙ্গে জেলার বাসিন্দাদের যোগাযোগ আরও মসৃণ করতে বিশেষ অ্যাপ আনতে চলেছে জেলা পুলিশ। নিজস্ব মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্টার্ড করে যে কেউ অভিযোগ লিপিবদ্ধ করতে পারেবেন এই অ্যাপের মাধ্যমে। পুলিশ সুপার দফতর এক সপ্তাহের মধ্যে ওই অভিযোগের নিষ্পত্তি করবে বলে জানা গেছে। কোনও কারণে পুনর্মূল্যায়ন করার জন্যে আবেদন এলে, তা পুলিশ সুপার আমনদীপ নিজে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
পুলিশ সুপার দফতরে জনঅভিযোগ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন অনেক মানুষ আসেন। বয়স্ক ও মহিলারাও লাইনে দাঁড়িয়ে অভিযোগ জানান। আবার অভিযোগের পরে কী হল, সেটা জানতেও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাসিন্দারা আসেন। এতে অভিযোগকারীদের হয়রানি বাড়ে, খরচও হয়। সে কারণেই পুলিশ সুপার আমনদীপ ওই অ্যাপ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘খুব শীঘ্রই ওই অ্যাপ চালু হয়ে যাবে। বাড়িতে বসেই অভিযোগ জানানো যাবে, অভিযোগের ‘স্ট্যাটাস’ও জানতে পারবেন। একই সঙ্গে যাঁরা আমার দফতরে এসে অভিযোগ জানাবেন, তাঁদের অভিযোগও ওই অ্যাপ্লিকেশনে লিপিবদ্ধ হবে। ফলে তাঁরা বাড়িতে বসেই অভিযোগের পরবর্তী পদক্ষেপ জানতে পারবেন।’
জেলা পুলিশের দাবি, গত কয়েক মাস ধরে জেলায় জনসংযোগ বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছেন পুলিশ সুপার। জেলাবাসীর অভাব-অভিযোগ শোনা, বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন তিনি। সেই মতো তিন-চার মাস আগেই তিনি অভিযোগ জানানোর জন্যে বিশেষ অ্যাপ তৈরির উপর জোর দেন। সেই অ্যাপ তৈরি হয়ে গিয়েছে। তবে এখনও কোনও পোশাকি নাম ঠিক করতে পারেননি পুলিশ আধিকারিকরা। পুলিশ আধিকারিকদের দাবি, কয়েক দিনের মধ্যেই বাংলায় নজরকাড়া নাম ঠিক করে অ্যাপটি চালু করা হবে। এর ফলে অনেক বয়স্কদের সঙ্গে সাধারণ মানুষও উপকৃত হবেন।
জানা গেছে, অভিযোগকারী নিজের মোবাইল নম্বর রেজিস্টার্ড করার পরে অ্যাপের ভিতরে ঢুকতে পারবেন। সেখানে কী কী ধরণের অভিযোগ করতে চাইছেন সেই লেখা ফুটে উঠবে। তা পছন্দ করার পরে অভিযোগ করতে হবে। ছবি দেওয়ারও জায়গা থাকছে। অভিযোগ শেষ হওয়ার পরে ‘Done’ টিপতেই প্রাপ্তিস্বীকার নম্বর মিলবে। ওই প্রাপ্তিস্বীকার নম্বর দিয়ে অভিযোগের নিষ্পত্তি সম্পর্কে জানা যাবে। অভিযোগ নিষ্পত্তির পরেও সন্তুষ্ট হতে না পারলে পুনর্মূল্যায়ন করা যাবে। যা সরাসরি পুলিশ সুপার নিজে দেখবেন। জানা গেছে, অভিযোগের সত্যতা মিললে সংশ্লিষ্ট অভিযোগকারিকে ফোন করে নির্দিষ্ট থানায় এফআইআর করতে পরামর্শ দেওয়া হবে।
জানা যাচ্ছে, পুলিশের বিরুদ্ধেও নিয়মিত অভিযোগ আসবে বলে ধরেই নিয়েছে পুলিশ সুপারের দফতর। ঠিক হয়েছে, যে পদমর্যাদার অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠবে, তাঁর উপরের পদমর্যাদার অফিসার তদন্ত করে পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট করবেন। সেই রিপোর্ট দেখে পুলিশ সুপার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।