হারিয়ে যাওয়া তাঁত শিল্পকে বিশ্বের মানচিত্রে তুলে ধরার লক্ষ্যে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রামে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, সঙ্গে বিশ্বের নাম করা সব ফ্যাশন ডিজাইনার, অ্যানিমেশন ডিজাইনার, চলচ্চিত্র পরিচালকরা। মঙ্গলবার সকাল থেকেই পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের বেনিনগর গ্রামে তাঁত শিল্পীদের বাড়ি বাড়ি ঘুরলেন তাঁরা।
নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত। বছর দুয়েক আগে ফ্রান্সের একটি মেলাতে তিনি একটি পাঞ্জাবি কিনেছিলেন। সেই পাঞ্জাবির কাপড়টি এত মসৃণ ও সুন্দর দেখে তিনি খোঁজ নেন বিশ্বের কোথায় এই কাপড় পাওয়া যায়। ফ্রান্সের ওই মেলায় আয়োজক ছিলেন দিল্লির বিখ্যাত ডিজাইনার সুখেত ধীর। এরপর সুখেত ধীরের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারেন এই সুন্দর কাপড়টি তাঁর নিজের দেশ ভারতবর্ষের বাংলার প্রত্যন্ত কেতুগ্রামের বেনিনগর গ্রামে তৈরি। এরপর তিনি ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে বেনিনগর গ্রামে আসেন এবং তাঁতিদের সঙ্গে কথা বলেন।
কেতুগ্রাম এলাকায় বেনিনগর সহ আরও ছটি গ্রামে প্রায় হাজারখানেক তাঁত শিল্পী রয়েছেন যারা হাতে তাঁত বোনেন। তাঁতিদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারেন, দীর্ঘ লকডাউন ও করোনা অতিমারির ধাক্কায় তাঁদের ব্যবসায় নেমে এসেছে মন্দা। তার উপর পাওয়ারলুম মেশিন আসার ফলে তাঁদের কাপড়ের চাহিদা কমেছে। তাঁতিদের সেই কথা শোনার পর তাঁর মাথায় আসে এই কাপড় বিশ্বের দরবারে তিনি পৌঁছে দেবেন। সেইমতো মঙ্গলবার বেলা বারোটা নাগাদ কেতুগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রাম বেনিনগরে আসেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন ভারতের বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার সুকেত ধীর, চলচ্চিত্র পরিচালক রানু ঘোষ ও ফ্রান্সের বিখ্যাত অ্যানিমেশন ডিজাইনার সিয়ান অলিভিয়া। তারা ঘুরে ঘুরে তাঁতিদের কাজ দেখেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিজিৎ বাবু জানান, বিশ্বের দরবারে এই তাঁত শিল্পীদের কথা, তাঁদের হাতের কাজের কারুকার্য তুলে ধরাই তাঁদের প্রধান লক্ষ্য। অর্থনীতিবিদ হিসেবে তিনি জানেন কিভাবে অর্থনীতি চাঙা করা যায়। বাংলার তাঁত বিশ্বের দরবারে পৌঁছাতে পারলে একদিকে যেমন বাংলার তাঁত শিল্পীরাও উপকৃত হবেন পাশাপাশি উপকৃত হবে রাজ্য ও দেশ।