সরকারি উদ্যোগে পূর্ব ভারতে এই প্রথম বর্ধমান মেডিকেল কলেজে ফিটাল মেডিসিন ইউনিট চালু হল। শনিবার এই ইউনিটের উদ্বোধন করেন রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী তথা বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান স্বপন দেবনাথ। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, বিডিএর চেয়ারম্যান কাকলী তা গুপ্তা, জেলা পরিষদের মেন্টর উজ্জ্বল প্রামাণিক, হাসপাতাল সুপার ডা. তাপস ঘোষ, বর্ধমান থানার আইসি সুখময় চক্রবর্তী সহ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই ইউনিট চালু হওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়েরা উপকৃত হবেন। গর্ভস্থ ভ্রুণের রোগ নির্ণয় করা যাবে অতি সহজে এবং সেই অনুযায়ী ডাক্তার বাবুরা ব্যবস্থা নেবেন। এর ফলে গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের অবস্থা এবং তার গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করা সহজ হবে। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন, অনেকসময়ই শিশু ভূমিষ্ট হওয়ার পর নানাবিধ ত্রুটি ধরা পড়ে। ফলে মা বাবার কাছে তা বিরাট সমস্যা হিসাবে দেখা দেয়। এই চিকিৎসার ফলে আগে থেকেই সমস্যা নির্ধারণ করে তার সুচিকিৎসা করা সম্ভব হবে।
এব্যাপারে জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, রাজ্যের বুকে প্রথম এই ধরণের ইউনিট শুরু করা হল। তিনি জানিয়েছেন, এই মেশিনটি অনেক আগেই বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিল। এতদিন তা চালু করা সম্ভব হয়নি। এই ইউনিট চালু করার ফলে শিশু মৃত্যুর হার অনেকটাই কমানো যাবে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথমতঃ ভ্রূণের জিনগত সমস্যা নির্ধারণ এবং অন্য গঠনগত সমস্যা নির্ধারণ করতে পারা যাবে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করা যাবে। ফিটাল অ্যানোম্যালি স্ক্যান এবং ফিটাল ইকোকার্ডিগ্রাফি ইত্যাদিও এখানে হবে। হাসপাতাল সুপার ডা. তাপস ঘোষ জানিয়েছেন, পরে এই ইউনিটে কোরিয়োনিক ভিলাই বায়োপ্সি, অ্যামনিওসেনটেসিস ইত্যাদি শুরু করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। এছাড়াও ফিটাল রিডাকশন, ট্রান্সফিউশন ইত্যাদিও চালুর চেষ্টা করা হবে।
বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের প্রধান মৃণালকান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, এই ইউনিটে যুক্ত থাকছে রেডিওলজি, গাইনোকোলজি, পেড্রিয়াটিক মেডিসিন, বায়োকেমিষ্ট্রি এবং প্যাথলজি বিভাগ। এই মেশিন স্থাপনে সহায়তা পাওয়া গেছে গুজরাটের সুরাট মেডিকেল কলেজের। তিনি জানিয়েছেন, গাইনোকোলজি বিভাগ গর্ভবতী মায়েদের পরীক্ষা নিরীক্ষার পর এই পরীক্ষার প্রয়োজনবোধ করলে তাঁরা রেডিওলজি বিভাগে পাঠাবেন। তখনই তাঁদের ভ্রূণের স্ক্যান করা হবে।