সমস্ত কিছু তৈরি হয়েও কোন এক অজানা কারণে বন্ধ ছিল অন্ডালের রামপ্রসাদপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কুটিরডাঙা গ্রামের মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের আওতার কঠিন ও তরল বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি। ২০১৯ সালে এলাকাকে নির্মল এবং দূষণমুক্ত করতে সরকারি উদ্যোগে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছিল এই কেন্দ্রটি। কিন্তু তৈরি হওয়ার পরও এই কেন্দ্রের কাজ চালু হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা।
অন্ডালের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সুদীপ্ত বিশ্বাস জানান, ২০১৯ সালে মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে এই কঠিন ও তরল বর্জ্য নিষ্কাশন কেন্দ্রটি তৈরি হওয়ার পর কেন্দ্রটি বন্ধ অবস্থায় পড়েছিল। সুদীপ্তবাবু জানান, তিনি অন্ডাল ব্লকের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর সিদ্ধান্ত নেন যে, এই বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রগুলির কাজ পুনরায় চালু করার। এই নিয়ে এলাকায় বারবার স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে সেমিনার করা হয় ব্লক ও পঞ্চায়েতের তরফ থেকে। সেমিনারের মাধ্যমে স্থানীয়দের বোঝানো হয় যে এই ধরনের প্রকল্প এলাকায় চালু হলে স্থানীয় মানুষদেরই উপকার হবে। একদিকে যেমন এলাকাকে দূষণমুক্ত করতে কেন্দ্রটি সাহায্য করবে অন্যদিকে এই কেন্দ্রে এলাকার অনেক মানুষ কাজ পাবেন। সুদীপ্তবাবু জানান, ইতিমধ্যেই অন্ডালের কুটিরডাঙা ছাড়াও কাজোড়া ও উখরাতেও এই ধরণের কেন্দ্রের কাজ শুরু হয়েছে। বিশেষত, এই কঠিন ও তরল বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে এলাকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বর্জ্য পদার্থ এনে জমা করা হয়। এবং বিশেষ পদ্ধতিতে সেই বর্জ্য পদার্থ থেকে জৈব সার তৈরি হয়। সেই সার ফের চলে যায় বাজারে এভাবেই তৈরি হয় কর্মসংস্থান।
অন্ডালের কুটিরডাঙা এলাকার এই বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রের এক মহিলা কর্মী জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এই কেন্দ্রের কাজ শুরু হওয়ায় তাঁরা যেমন কাজ পেয়েছেন অন্যদিকে এলাকাকে দূষণমুক্ত করার কাজও শুরু হয়েছে। কেননা একসময় মানুষ বাড়ির বর্জ্য পদার্থ এদিক সেদিক ফেলে রাখত তাতে পরিবেশ দূষণের সঙ্গে বাড়ত দৃশ্য দূষণও। এই কেন্দ্রগুলো থেকে পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে সেই সকল বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহ করে এই কেন্দ্রে এনে বিশেষ পদ্ধতিতে সেই বর্জ্য পদার্থ থেকে তৈরি হয় জৈব সার। অন্ডালের ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক জানান, ইতিমধ্যেই অন্ডাল ব্লকে প্রায় তিন হাজারের বেশি বেনিফিশিয়ারি রয়েছেন। সুদীপ্তবাবু আরও জানান, আগামী দিনে এলাকায় প্লাস্টিক নিয়েও সচেতনতার প্রচার করা হবে। তিনি আরও জানান, আরও বেশি পরিমাণ বাড়িকে এই ধরণের প্রকল্পের আওতায় আনতে হবে, যাতে মানুষ এদিক-ওদিক আর ময়লা আবর্জনা না ফেলেন।