পূর্ব বর্ধমান জেলায় গত কয়েকদিনের বৃষ্টি ও দামোদরের জল ক্যানেল দিয়ে ঢুকে ক্যানেলের জলে ক্ষতির মুখে সব্জি ও ধান চাষীরা। খন্ডঘোষের আড়াডাঙা এলাকায় মুলত কয়েকশো বিঘেতে লঙ্কা চাষ হয়। পাশাপাশি লঙ্কা ছাড়াও পটল, ঝিঙে সহ বেশ কিছু সব্জি চাষ হয় এই এলাকায়। খণ্ডঘোষের আড়াডাঙার বাসিন্দা সেখ জসিমউদদীন নিজের দেড় বিঘা জমিতে লঙ্কা চাষ করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে লঙ্কা গাছের গোড়ায় যেমন জল ঢুকে গেছে, তেমনই পটলের মাচা চলে গেছে জলের তলায়। এদিকে ক্যানেল ও বৃষ্টির জলে চারিদিকের মাঠও পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় জল বের করতে পারা যাচ্ছে না। ফলে গাছের গোঁড়ায় জল দাড়িয়ে থাকায় বিঘের পর বিঘে জমিতে লঙ্কা নষ্ট হয়ে যাবে।
অন্যদিকে হেক্টরের পর হেক্টর আমন ধানের জমিও জলের তলায় চলে গেছে। এমনিতেই বৃষ্টির অভাবে কিছুটা হলেও আমন ধান চাষ শুরু হতে দেরী হয়েছে। ধান গাছ লাগানোর পর অতিবৃষ্টিতে অনেক ধান জমি জলের তলায় চলে যাওয়ায় চাষীরা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। ধান চাষীদের জানান, বাঁকা নদীর জল উপচে বিঘের পর বিঘে ধান জমি প্লাবিত হয়েছে। যেহেতু সবে ধান গাছ লাগানো হয়েছিলো তাই ৩-৪ দিন গাছ জলে ডুবে থাকায় সেগুলি নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে তারা ক্ষতির মুখে পরবেন।
যদিও পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা গতকাল জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত বৃষ্টির জমা জলে গোটা জেলায় প্রায় ১০২ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৯০০ টি মৌজা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার হেক্টর কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৩৫০ হেক্টর সব্জী চাষের জমিও রয়েছে। বাকি সব জমিই আমন ধানের বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, জল নেমে যাওয়ার পর ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা হবে। এরপর জল নেমে যাওয়ার পর নষ্ট হয়ে যাওয়া ধান লাগাতে গেলে বীজ ধান কোথা থেকে পাওয়া যাবে এবং দেরী করে ধান রোয়ার কাজ করলে আখেরে উৎপাদন কি হবে তা নিয়েও চাষীরা আশঙ্কায় আছেন।