করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে। আক্রান্তের সংখ্যা শতাধিক। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে আতঙ্ক। ফলে আনলক -১ চালু হলেও এবং সরকারি নির্দেশে সরকারি বাসের পাশাপাশি বেসরকারি বাস চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হলেও কেবলমাত্র যাত্রী না মেলায় বর্ধমান শহরে বৃহস্পতিবারও রাস্তায় সেভাবে নামে নি বেসরকারি বাস। তবে সরকারি বাস পরিষেবা চালু রয়েছে। বেসরকারি বাস পথে না নামায় সরকারি বাসে ভিড় বাড়ছে। শিকেয় উঠছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। যদিও সরকারি বাসে ওঠার আগে যাত্রীদের থার্মাল স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। চালু হয় নি বর্ধমান শহরে টাউন সার্ভিস বাস পরিষেবাও। বর্ধমানের নবাবহাটের উত্তরা ও আলিসার পূর্বাশা বাস টার্মিনাস থেকে এদিন কোন বেসরকারি বাসের চাকা গড়ায় নি। যদিও বাস মালিক সংগঠনের নেতা শরৎ কোনার দাবি করেছেন, বেসরকারি বাস রাস্তায় নেমেছে। কিন্তু যাত্রী না থাকায় খুব সমস্যা হচ্ছে। একবার বাস গন্তব্যে গিয়ে তেলের দাম না ওঠায় আর সেই বাস ফিরে আসছে না।
শরৎবাবু বেসরকারি বাস পথে নেমেছে দাবি করলেও সাধারণ মানুষ কিন্তু এদিন উল্টো কথা বলছেন। সরকারি বাস হাতেগোনা কয়েকটি চলাচল করলেও বেসরকারি বাস একদমই চলছে না। সব বাস দাঁড়িয়ে আছে বাসস্ট্যাণ্ডে। ফলে বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত মানুষজন পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। গন্তব্যে যাওয়ার জন্য বা কর্মক্ষেত্রে পৌঁছানোর জন্য সকাল থেকেই বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। হাপিত্যেশ করেও বাসের দেখা মিলছে না। দুর্গাপুর-কলকাতা ভলভো বাস পরিষেবা পুরোপুরি চালু না হলেও কয়েকটি বাস চলছে। কিন্তু বাসের ভাড়া দ্বিগুণ করে দেওয়ায় আমজনতা তাতে উঠতে সাহস পাচ্ছে না।
জানা গেছে, বুধবার জেলায় বিভিন্ন রুটের মোট প্রায় ৯০০ থেকে সাড়ে ন’শো বাসের মধ্যে ১০০ বাসও চলেনি। বাস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, আলিশার পূর্বাশা বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন গড়ে আড়াইশো থেকে তিনশো বাস জেলা ও জেলার বাইরে যাতায়াত করে। নবাবহাট উত্তরা বাস স্ট্যান্ড থেকেও গড়ে প্রায় ৩০০ বাস যাতায়াত করে। এছাড়াও শক্তিগড়, বড়শুল, রসুলপুর, মেমারি সহ পূর্ব জিটি রোডে আরও প্রায় ৫০ থেকে ৫৫টি বাস নিয়মিত যাতায়াত করে। একইভাবে দক্ষিণ দামোদরের দিক থেকে তথা বাঁকুড়া, আরামবাগ প্রভৃতি রুটে প্রতিদিন গড়ে প্রায় আড়াইশো বাস চলাচল করে। কিন্তু এদিনও কেবলমাত্র যাত্রী না মেলায় বেসরকারি বাসের খরচ ওঠাতে না পারায় চলেনি কোনো বাস। বাসের ভাড়া না বাড়লেও নূন্যতম প্রয়োজনীয় যাত্রী না মেলায় সমস্যায় পড়েছেন বাস মালিকরা। অপরদিকে, বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (পরিবহণ) রজত নন্দা জানিয়েছেন, বেসরকারি বাস মালিকরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন। প্রশাসনিকভাবে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বাসের সিট অনুসারেই যাত্রী যেতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই বাসে দাঁড়িয়ে যাওয়া চলবে না। একইসঙ্গে করোনা সংক্রান্ত বিধি নিষেধও মানার কথা বলা হয়েছে। যদিও বাস মালিকরা জানিয়েছেন, বাসে দাঁড়িয়ে যাবার প্রশ্নই নেই, সিটে বসে যাবার যাত্রীই তাঁরা পাচ্ছেন না।