বীরভূমের নলহাটি থানার নসীপুরের বাসিন্দা তথা মাধ্যমিকের ছাত্র অরিজিত দাসের (১৬) অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ভয়াবহ তথ্য উঠে এল অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস নিয়ে। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বীরভূমের রামপুরহাট হাসপাতাল থেকে অরিজিতকে স্থানান্তরিত করা হয় বর্ধমানে। এরপর তাকে বর্ধমানের অন্নপূর্ণা নার্সিংহোমে নিয়ে আসা হয় বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে চারটে নাগাদ। সেখানে তাঁর রক্ত সহ কয়েকটি পরীক্ষা করান চিকিৎসক। কিন্তু পরিস্থিতি দেখেই তিনি অরিজিতকে কলকাতার এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন। একইসঙ্গে অরিজিতের শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা তীব্রতর হওয়ায় তাকে কলকাতায়
নিয়ে যাওয়ার জন্য আইসিসিইউ সুবিধাযুক্ত (ভেন্টিলেশনের সুবিধা) অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

এরপরই পরিবারের লোকজন বর্ধমানের তারা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আর সেই অ্যাম্বুলেন্সেই তাকে কলকাতার এসএসকেএমের পরিবর্তে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার সিএমআরআই-তে। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাবার আগে পথেই মৃত্যু হয় অরিজিতের। এই ঘটনায় পরিবারের অভিযোগক্রমে পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ওই অ্যাম্বুলেন্সের চালক তারাবাবু শাহ এবং সঙ্গে থাকা এয়ারকণ্ডিশনার টেকনিসিয়ান সরফরজউদ্দিনকে। আটক করা হয়েছে ওই অ্যাম্বুলেন্সটিকেও।

জানা গেছে, ওই অ্যাম্বুলেন্সটি মোটেই ভেন্টিলেশন সুবিধাযুক্ত নয়। কেবলমাত্র এয়ারকণ্ডিশন সুবিধা যুক্ত। মৃত ছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, বর্ধমান থেকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তারাবাবু ১৬ হাজার টাকায় রফা করেন। চেয়েছিলেন ১৮ হাজার টাকা। একইসঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সটিকে ভেন্টিলেশন সুবিধাযুক্ত প্রমাণ করার জন্য বর্ধমানের সাতগেছিয়ার বাসিন্দা এসি মেকানিক সরফরাজউদ্দিনকে জোগাড় করে প্যারামেডিক কর্মী সাজিয়ে নিয়ে যান। স্বাভাবিকভাবেই তার এই সূক্ষ্ম প্রতারণার বিষয়টি প্রথমে ধরতেই পারেনি মৃত ছাত্রের পরিবারের লোকজন। জানা গেছে, এসি সুবিধাযুক্ত এই অ্যাম্বুলেন্সটির ভাড়া সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা হতে পারত। অপরদিকে, সুযোগ বুঝে রোগী পরিবারের সঙ্গে এই প্রতারণার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্যাধিকারিক ডা. প্রণব রায় গোটা ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

Like Us On Facebook