রাজ্য থেকে ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে আবার অস্বাভাবিক মৃত্যু। এবার পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষের বেড়ুগ্রামের মোল্লাপাড়ার যুবক বজরুল মল্লিকের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে। ১৮ বছরের এই যুবক বজরুল মল্লিক প্রায় আট মাস আগে রাজমিস্ত্রীর সহকারির কাজ করতে পাড়ি দিয়েছিল তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ের তিরুধুনাগারে।
বজরুলের বাবা আমিন মল্লিক জানিয়েছেন, প্রায় আট মাস আগে রাজমিস্ত্রীর কাজ করার জন্য মাসে বেতন হিসাবে বারো হাজার টাকা পাবার আশায় বজরুল তিরুধুনাগারে গিয়েছিল। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে বজরুল ছিল সবার থেকে ছোট। পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নতির জন্যই বজরুলের ভিন রাজ্যে যাওয়া। কিন্তু মোটা মাইনের লোভে ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে ছ’মাস কাজ করেও ঠিক মত বেতন পায় নি বজরুল সহ তার বন্ধুরা। সেই জন্য মাস খানেক আগে বজরুলের দাদু মারা গেলেও বাড়ি ফিরতে পারে নি সে।
এদিকে, বুধবার সকালে বাবা আমিন মল্লিককে বজরুল ফোনে জানায় ট্রেনের টিকিট কাটা হয়েছে বৃহস্পতিবার বিকালে সে ট্রেনে রওনা হচ্ছে। আমিনবাবু জানিয়েছেন, বুধবার সকালের সেই ফোন পাওয়ার পর গোটা পরিবারেই খুশীর হাওয়া বয়েছিল। কিন্তু এরপর বুধবার বিকালে বজরুলের বাড়িতে ফোন আসে। বলা হয়, বজরুল ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছে। তিনি জানিয়েছেন, ওই ফোন আসার পর থেকে তাঁরা আর কোন যোগাযোগই করতে পারছেন না। এমনকি যে দুই বন্ধুর সঙ্গে বজরুল কাজে গিয়েছিল তাদের সঙ্গেও ঠিক মত যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। আমিনবাবু জানিয়েছেন, টাকা তো অনেক দূরের কথা এখন কি করে মৃত বজরুলের দেহ বাড়িতে ফিরবে তাই নিয়ে চিন্তিত গোটা পরিবার ও গ্রাম। ইতিমধ্যে অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে গ্রামের বাসিন্দারা। জানানো হয়েছে খণ্ডঘোষের তৃণমূল বিধায়ককেও।
এদিকে, সদ্য সন্তান হারানো বাবা আমিন মল্লিকের অভিযোগ তার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। আর তাই এই ঘটনার তদন্তও চান তাঁরা। তবে তার আগে তাঁরা কিভাবে ছেলের মৃতদেহকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন তা বুঝতে পারছেন না। তাই বাধ্য হয়েই এদিন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে আবেদনও পাঠিয়েছেন আমিন মল্লিক। তিনি জানিয়েছেন, এই মূহূর্তে এই পরিবারের ভরসা রাজ্য সরকার। নিশ্চয় সরকার মৃতদেহ ফেরানোর ব্যবস্থা করবে। দোষীরা শাস্তি পাবে। তাঁদের ভরসা রয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উপর। অন্যদিকে, এব্যাপারে জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনাটির কথা তিনি শুনেছেন। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন যাবতীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।