দীর্ঘদিন ধরেই জাল সার্টিফিকেট তৈরি করে চলছিল অর্থ রোজগার। সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিতে রাখা হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়কের সার্টিফিকেটও। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। জাল সার্টিফিকেট তৈরির অভিযোগে মেমারির পারিজাত নগর থেকে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ গ্রেফতার করল বিপ্লব সরকার ওরফে বিপ্লব রায় নামে এক যুবককে। ধৃতের কাছ থেকে মেমারির প্রাক্তন ও বর্তমান বিধায়কের সই, সার্টিফিকেট ছাড়াও বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি এবং জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নামেও একাধিক ভুয়ো স্ট্যাম্প ও স্বাক্ষর উদ্ধার হয়েছে।
মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুপ্রভাত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ধৃতের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে স্ট্যাম্প, প্রচুর জাল জন্ম ও মৃত্যু সার্টিফিকেট, বিভিন্ন প্রাক্তন বিধায়কের প্যাড, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের প্যাডও মিলেছে। তিনি জানিয়েছেন, মোটা টাকার বিনিময়ে এই বিপ্লব সরকার জাল আধার, ভোটার কার্ড, সার্টিফিকেট তৈরি করে দিত বলে অভিযোগ। এসডিপিও জানিয়েছেন, প্রায় ৯ মাস আগে পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পারিজাত নগরের বাসিন্দা অতনু মন্ডল নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা নিয়েছিল সে। এরপর তাঁকে একটি ভুয়ো প্যানকার্ড দেন। তা নিয়ে তিনি পাসপোর্ট অফিসে গেলে জানতে পারেন তাঁর প্যান কার্ডটি ভুয়ো।
অতনু মণ্ডল জানিয়েছেন, আট মাস পরও তাঁর পাসপোর্ট মেলেনি, উল্টে জাল প্যান কার্ড পান তিনি। এরপরই তিনি মেমারি থানার দ্বারস্থ হন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বিপ্লবের বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখানেই প্রচুর জাল সিল, স্ট্যাম্প, বর্ধমান মেডিকেল, এনআরএস সহ বিভিন্ন হাসপাতালের প্যাড, জাল জন্ম মৃত্যু সার্টিফিকেট, ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার, ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে ধৃতকে এদিনই বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। এদিকে, বিপ্লব সরকারকে গ্রেফতারের পরই নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে যে – এই পারিজাত নগর এলাকায় বহু বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষের বসবাস। এমনকি বাংলাদেশের আত্মীয়রাও এখানকার বাসিন্দাদের কাছে নিয়মিত যাতায়াত করেন। সেক্ষেত্রে বহিরাগতদের কোনোভাবে ভুয়ো সার্টিফিকেট বিপ্লব সরকার দিত কিনা তা নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।