গোটা রাজ্যের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলায় রান্নাঘর ও শৌচাগারের বর্জ্য পদার্থকে বিজ্ঞানসম্মতভাবে ব্যবহার করে সার তৈরি নিয়ে একদিনের কর্মশালা হয়ে গেল সংস্কৃতি লোকমঞ্চের অ্যানেক্সে। রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর এবং ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মশালায় এদিন হাজির ছিলেন পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম ও হুগলী জেলার প্রতিনিধিরা।

পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, এই প্রশিক্ষণের পর প্রশিক্ষিতরা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে একেবারে ব্লক স্তরে প্রশিক্ষণ দেবেন। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম জানিয়েছেন, গোটা জেলায় শৌচাগারের বর্জ্য পদার্থ শক্ত ও তরল এবং রান্নাঘরের বর্জ্য পদার্থগুলিকে দুটি আলাদা আলাদাভাবে সংগ্রহ করা হবে। এরপর সেই বর্জ্যপদার্থগুলিকে সারে পরিণত করে তা চাষের কাজে ব্যবহার করা হবে। তিনি জানিয়েছেন, এই প্রকল্পে প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকাতেই আগামী দিনে একটি করে এই ধরণের সার কারখানা তৈরি হতে চলেছে।

উল্লেখ্য, সোমবার এই প্রকল্প নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হলেও ইতিমধ্যেই বর্ধমানের কালনা ১নং ব্লকের কৃষ্ণদেবপুরে জেলা পরিষদের উদ্যোগে এই সার কারখানার জন্য মেসিন বসানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই সেখানে কাজও শুরু হবে। বাগবুল ইসলাম জানিয়েছেন, এসএলডবলুএম প্রকল্পে তাঁরা গোটা জেলায় বাড়ির আবর্জনা সংগ্রহ করে তা থেকে সার তৈরির কাজ শুরু করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গোটা জেলা জুড়ে যেভাবে খোলা জায়গায় মলমূত্র বন্ধ করার আন্দোলন সৃষ্টি হয়েছিল সেই একইভাবে এই নতুন প্রকল্পের কাজও হবে। তিনি জানিয়েছেন, রান্নাঘরের বর্জ্য পদার্থের মধ্যে তরল পদার্থ এবং বিশেষ করে বাথরুমের জলকে আলাদাভাবে সংগ্রহ করা হবে। এজন্য প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে আলাদা আলাদা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পায়খানার মলকে বিশেষ ধরণের গাড়ির মাধ্যমে সংগ্রহ করে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে সার কারখানায়। সার তৈরির পর তা বিপণনের ব্যবস্থাও করা হবে।

প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য, খোলা মাঠে মলমূত্র ত্যাগ না করার জন্য গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রতিটি বাড়িতে তৈরি করা হয়েছে পাকাপোক্ত শৌচাগার বা পায়াখানাঘর। সেই সমস্ত শৌচাগারগুলি যথাযথভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে সম্প্রতি সার্ভেও করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, জেলার ৯০ শতাংশ মানুষই এই শৌচাগার ব্যবহার করছেন। বাকি ১০ শতাংশের কি কি অসুবিধা রয়েছে তা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এদিনে বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চের এই কর্মশালায় হাজির ছিলেন রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের অতিরিক্ত সচীব শুভ মুখোপাধ্যায়, ইউনিসেফের প্রতিনিধি সহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু, জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম ছাড়াও জেলার জেলা পরিষদের সচীব, মিশন নির্মল বাংলার সংযোজক, নির্দিষ্ট জয়েণ্ট বিডিওরাও।

Like Us On Facebook