বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে করোনা ঠেকানো যাবে না, কন্টেনমেন্ট জোনের ধরণ নিয়ে সরব রাজ্যের কোভিড উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ডা. অভিজিৎ চৌধুরী। লোহার বাসর ঘর করেও লক্ষীন্দরকে সাপের ছোবল থেকে বাঁচানো যায়নি। তেমনই বাঁশের ব্যারিকেডের প্রাচীর তুলে জেলে ভরার মত মানুষগুলোকে রেখে দিয়েও কোভিডকে ঠেকানো যাবে না। শনিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাদম্বিনী সভাঘরে কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক নামে একটি সংস্থার বর্ধমান শাখা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এই কথা বলেন তিনি। কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের কাজ শুরুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে করোনাকে জয় করার জন্য লড়াইয়ের আহ্বান জানান তিনি।
কলকাতা সহ গোটা রাজ্যের সমস্ত জেলায় জেলায় এই নেটওয়ার্কের কাজ শুরু হয়েছে। মূলত এই নেটওয়ার্কের কাজ – করোনাকে প্রতিহত করতে মানুষকে সচেতন করা। কোভিড মানেই আতঙ্ক, কোভিড মানেই মৃত্যু, ভয়, বিভীষিকা নয়। তিনি জানান, কোভিডে আক্রান্ত হয়ে যাঁরা সুস্থ হয়ে উঠেছেন সেই কোভিড জয়ী এবং কোভিড সহযোগী তাঁরাই এই নেটওয়ার্কের সম্পদ। তিনি এদিন উপস্থিত বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ক্লাব, সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষদের কাছে আবেদন রাখেন করোনা নিয়ে অহেতুক ভীতি বন্ধ করতে হবে।
লক্ষীন্দরকেও সাপের ছোবল থেকে লোহার বাসর ঘর বাঁচাতে পারেনি। তেমনই কন্টেনমেন্ট জোনের নামে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়েও করোনাকে ঠেকানো যাবে না। তিনি এদিন বলেন, এব্যাপারে তাঁরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন। বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে সমাজকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত করা হচ্ছে। কন্টেনমেন্ট জোনের নামে মানুষগুলোকে যেন জেলখানায় পুরে দেওয়া হচ্ছে। খুব কষ্টের মধ্যে তাঁরা আছেন। তাঁরা মনে করছেন সমাজ থেকে তাঁরা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। মানসিকভাবে তাঁদের মেরে দিয়ে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করা যাবে না। প্রশাসনকে আরও সংবেদনশীল হতে হবে। একটা উষ্ণ সমাজ গড়তে হবে। মানুষকে বেঁধে করোনাকে প্রতিহত করা যাবে না।
করোনার জেরে মানুষ স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছে। কেউ কারও কথা ভাবছে না। করোনা নিয়ে একটা ভুল ভাবনা রয়েছে। তাকে দূর করতে হবে। করোনা মানে মৃত্যু নয়, করোনা মানে জয় – এটাই তুলে ধরতে হবে। প্রশাসনের সমস্ত নিয়ম মানতে হবে। বেড়া না দিয়ে অন্য কোনোভাবে ভাবতে হবে। পুকুরঘাটে বেড়া দিয়ে করোনাকে ঠেকানো যাবে না। বরং প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করেই বিকল্প পথের সন্ধান করতে হবে। আজকের দিনে এটাই বড় জরুরী।