গত শুক্রবার থেকে টানা বৃষ্টির জেরে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রায় ৪০ হাজার হেক্টরেরও বেশি কৃষি জমি জলের তলায়। একইসঙ্গে বর্ধমান জেলার পার্শ্ববর্তী হুগলী, মেদিনীপুর জেলাতেও অতি বৃষ্টি ও বন্যার জেরে এখনও কৃষি জমি জলের তলায়। আর তাতেই ক্রমশই আতঙ্ক দেখা দিচ্ছে। বিশেষত, ইতিমধ্যেই কৃষি দপ্তর থেকে প্রশাসনিক মহল – সর্বত্রই আশঙ্কা প্রকাশ করতে শুরু করেছেন এই দুর্যোগের জেরে রীতিমত অগ্নিমূল্য হতে চলেছে সব্জীর বাজার থেকে মাছের বাজারও। গত প্রায় সাতদিন ধরে এই অতি বৃষ্টি এবং কৃষি জমি এবং বিশেষত সব্জী চাষের জমিগুলি প্লাবিত হওয়ায় ইতিমধ্যেই বাজার চড়তে শুরু করেছে। যা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ব্যাপক হারেই বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী থেকে চাষিরা।
বর্ধমানের খণ্ডঘোষের উখরিদের চাষি সামসুল হক যিনি বর্ধমানের তেঁতুলতলা বাজারে নিয়মিত কাঁচা সব্জীর ব্যবসা করে আসছেন, তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বাজার থেকে উধাও উচ্ছে। পরিবর্তে করলা রয়েছে। যার বেশিরভাগটাই আসে মেদিনীপুর থেকে। ৭দিন আগেও যে করলার দাম ছিল ২০ টাকা প্রতি কেজি এখন তাই ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। তাও প্রয়োজনের তুলনায় জোগান আসছে না। তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমান শহরের বিভিন্ন বাজারে কাঁচা সব্জীর যোগান আসে পাশের হুগলী, মেদিনীপুর কিংবা মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে।
বর্ধমান শহরের বৃহৎ সব্জী বাজার তেঁতুলতলা বাজারের একাধিক খুচরো ও পাইকারী ব্যবসায়ীরাও রীতিমত আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, জমি থেকে জল নামলেই পচতে শুরু করবে সমস্ত সব্জী গাছ। ফলে অমিল হবে বিভিন্ন সব্জী। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, কুমড়োর দাম যা ছিল ৭ থেকে ৮ টাকা প্রতি কেজি বৃষ্টি ও জলের জন্য তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২-১৫ টাকা প্রতি কেজি। কাঁচাকলার দাম প্রতিটির বেড়েছে ৩ থেকে ৪ গুণ। ছিল ২ থেকে ৩ টাকা প্রতিটি। এখন বিকোচ্ছে ৬ থেকে ৮ টাকায় প্রতিটি। ২৫ – ৩০ টাকার চালানি ফুলকপির দাম ৭০ টাকা। আগে যেখানে গড়ে প্রায় ১০০ বস্তা ফুলকপি আসত। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০-১৫ বস্তায়। ফলে দাম চড়ছেই। দাম চড়েছে বাঁধাকপি, ঝিঙে, বেগুন, পটল, পেঁপে, টমেটো, ঢেঁড়স,শশা প্রভৃতিরও। গড়ে এই সমস্ত কাঁচা সব্জির দাম বেড়েছে ৩ থেকে ৪ গুণ পর্যন্ত। আগেই টমেটো বাজারে আগুন ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার বর্ধমানের বাজারে টমেটো ১০০ টাকা কেজিতে বিকিয়েছে। এদিন চাষি থেকে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বন্যার জল নামার পর সব্জীর এই বাজার আরও বাড়বে যার প্রভাব গিয়ে পড়বে গৃহস্থের হেঁসেলে।