বন্দে ভারত এক্সপ্রেস নিয়ে যখন আবেগ, উন্মাদনা গোটা রাজ্যজুড়ে। গর্ব করছে গোটা ভারতবর্ষ। তখন ভীড়েঠাসা বর্ধমান স্টেশনের ১ নং প্ল্যাটফর্মের এককোণে দাঁড়িয়ে থাকা সুনিতা কুমারী’র গর্বের মাত্রাটা হয়ত তখনও কেউ আঁচ করতে পারেন নি। কিন্তু বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনের জানালা দিয়ে ভিড় ঠেলে চালক তাঁর উদ্দেশ্যে হাত নাড়তেই টনক নড়লো সবার। সেই মুহূর্তে গোটা দেশ তথা রাজ্যের সাথে তিনিও গর্ব অনুভব করছেন। কিন্তু সুনিতা কুমারীর গর্বের মাত্রাটা মনে হয় একটু বেশীই। একদিকে রেলের ঐতিহাসিক মূহুর্তে তিনি যেমন সামিল হতে পেরেছেন তেমনই অন্যদিকে যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসকে কেন্দ্র করে এই উন্মাদনা ও উচ্ছ্বাস পূর্বরেলের সেই প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের চালক তাঁর স্বামী অনিল কুমার। তবে প্রধানমন্ত্রী স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে পারলে আরও বেশী আনন্দ হত বলে জানিয়েছেন সুনিতাদেবী।
সুনিতা কুমারী জানান, ১৯৯০ সালে রেলের অ্যাসিন্ট্যান্ট ড্রাইভার হিসাবে কাজে যোগ দেন অনিল কুমার। বরাবরই কর্মপ্রিয় অনিল কুমারের লক্ষ্য ছিল সবথেকে গুরত্বপূর্ণ ট্রেনগুলো চালানো। বিভিন্ন মেল, এক্সপ্রেস চালানোর পাশাপাশি পূর্বা, শতাব্দি, রাজধানী ও দুরন্ত এক্সপ্রেসও চালিয়েছেন তিনি। চলতি মাসের ৭ তারিখে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালানোর জন্য স্পেশাল ট্রেনিংয়ে উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে যান। ট্রেনিং শেষে ১৯ তারিখ তিনি ফিরে আসেন। স্বভাবতই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন চালানো একটা আলাদা মাইলস্টোন। তাই একদিকে যেমন বন্দে ভারত ট্রেন দেখার ইচ্ছা ছিল তেমনই স্বামীর চাকরী জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের সাক্ষী হওয়ার তাগিদেই স্টেশনে গিয়েছিলাম। তবে দূর থেকে দেখা হলেও কথা হয়নি। যাত্রী নিরাপত্তার কথা ভেবে আমিও খুব কাছে যাওয়ার চেষ্টাও করিনি। তবে ওনাকে যখন স্টেশনে উপস্থিত মানুষজন ফুল ও মিষ্টি দিয়ে সংবর্ধনা দিচ্ছিলেন সেটা দেখে গর্ব হচ্ছিল। আদতে বিহারের বাসিন্দা অনিল কুমার বর্তমানে বর্ধমানের লোকো সারদাপল্লীতে পরিবার নিয়ে থাকেন। সাময়িক প্রতিক্রিয়ায় অনিল কুমার জানান, আনন্দে কোন কথা বলতে পারছি না।