ভ্যাকসিন ক্যাম্প মানেই ভোর থেকে লম্বা লাইন, ভ্যাপসা গরমে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা, সঙ্গে উপরি পাওনা ঠেলাঠেলি, হুড়োহুড়ি। সেই জায়গায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজের ছবিটা একেবারেই অন্যরকম। এখানে ভ্যাকসিন নিতে এসে সুমধুর গান শোনা ফ্রি। ভ্যাকসিন রুমেই সঙ্গীতের ব্যবস্থা থাকায় খুশী যুবক-যুবতী থেকে বয়স্করা।
ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করার প্রথম দিকে একটা সময় ছিল যখন ডেকে হেঁকেও ভ্যাকসিন দেওয়ার লোক পাওয়া যায়নি। আর এখন অনেকের কাছেই ভ্যাকসিন অধরা। প্রথম ডোজ পাওয়াটাই যেন লটারি পাওয়ার মতই। আর এই পরিস্থিতিতে এখন প্রতিদিন ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অনেকটা বাড়িয়েছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ। এখানে বেশ কয়েকটি টেবিল করে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিনের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হচ্ছে। চিন্তামুক্ত মনে শান্ত পরিবেশে যাতে পুরুষ-মহিলারা ভ্যাকসিন নিতে পারেন সে ব্যাপারে এখানে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিন কেন্দ্রে ঢোকা থেকে বের হওয়া পর্যন্ত থাকছে রাবীন্দ্রিক পরিবেশ। বাজছে শ্রুতিমধুর রবীন্দ্র সঙ্গীত। অপেক্ষা করা ও ভ্যাকসিন নেওয়ার পর বিশ্রামের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত বসার আসন, ঠান্ডা পরিবেশ। স্বাভাবিকভাবেই খুশি ভ্যাকসিন নিতে আসা সকলেই।
বর্ধমান মেডিকেলের ভ্যাকসিন কর্মসূচি কেন্দ্রের উপদেষ্টা সুব্রত সেন বলেন, ‘এমনিতেই ইঞ্জেকশন নেওয়ার কথা ভাবলেই সকলের মনে একটা ভীতি তৈরি হয়। টেনশন তৈরি হয়। তাই টেনশন-ফ্রি পরিবেশ তৈরির উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি আমরা। এখান থেকে সবাই ভয়শূন্য মনে ভালো থাকার সংঙ্কল্প নিয়ে বাড়ি ফিরুক – সেই ভাবনা থেকেই এই পরিবেশ রচনা।’
অনেকেই সংবাদ মাধ্যমে ভ্যাকসিন সেন্টারের অব্যবস্থা, অপেক্ষা, অনিয়মের ছবি দেখছেন নিয়মিত। সেই ভীতি নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে এসে এখানের পরিবেশে আপ্লুত তাঁরা। এক কথায় সদিচ্ছা, গঠনমুলক চিন্তাভাবনার মাধ্যমে সবকিছুই যে সম্ভব তা করে দেখাচ্ছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ।