পরপর তিনটি কন্যা সন্তান হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারে আত্মঘাতী হলেন এক গৃহবধু। মৃতার নাম সাহিনা পারভিন চৌধুরী (২৮)। শ্বশুরবাড়ি খণ্ডঘোষের জুবিলার সাঁকো গ্রামে। বাপের বাড়ি খণ্ডঘোষের দুবরাজহাট এলাকায়।
মৃতার বাবা খোন্দেকার নুরুল আনসার এবং ভাই খোন্দেকার আতিকুর জানিয়েছেন, প্রায় বছর বারো আগে মহম্মদ হুসেন চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে হয় সাহিনার। মহম্মদ হুসেন চৌধুরী গুজরাটে সোনা-রুপার দোকানে কাজ করেন। মৃতার বাপের বাড়ির লোকজনদের অভিযোগ, বিয়ের পর সাহিনার পরপর তিনটি কন্যা সন্তান জন্মায়। তাদের বয়স ১০, ৬ এবং ৩ বছর। পরপর এই কন্যা সন্তান হওয়ায় লাগাতার অত্যাচার চালাতে থাকে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এই বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে তাঁরা কয়েকবার আলোচনাতেও বসেন। কিন্তু শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলতেই থাকে। তার জেরেই শুক্রবার রাত্রি প্রায় ১০টা নাগাদ নিজেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
নুরুল আনসার জানিয়েছেন, রাত ১১টা নাগাদ ফোনে তাঁদের জানানো হয়। তাঁরা রাত্রি ১২টা নাগাদ মৃতার শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দেখেন সাহিনাকে মেঝেতে শুইয়ে রাখা হয়েছে। তখনও সে জীবিত। কিন্তু তার চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থাই করা হয়নি। এরপরই তাঁরা প্রথমে সাহিনাকে সেহারাবাজারের একটি বেসরকারী নার্সিংহোমে নিয়ে যান। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় শুক্রবার রাতেই তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু হাসপাতালও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ফের তাঁরা বর্ধমানের অপর একটি নার্সিংহোমে সাহিনাকে নিয়ে যান। রবিবার গভীর রাতে মৃত্যু হয় সাহিনার। মৃতার পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, এব্যাপারে তাঁরা খণ্ডঘোষ থানায় অভিযোগ করবেন।