করোনার জন্য গোটা রাজ্য জুড়ে প্রায় সমস্ত সেক্টরই ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে খোলা রয়েছে। হচ্ছে গঙ্গাসাগর মেলা, জয়দেবের কেঁদুলি মেলা। অথচ করোনার জন্য প্রায় ২ বছর ধরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ট্যুরিস্ট বাস চলাচল। এই অবস্থায় জীবনধারণ সসহ সংসার প্রতিপালন করতে চরম সমস্যার মুখোমুখি হয়ে পড়েছেন ট্যুরিষ্ট বাসের কর্মী থেকে মালিকপক্ষও। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কর্মীরা জোড় হাত করে আবেদন জানালেন, ট্যুরিস্ট বাস চলতে দেওয়া না হলে মৃত্যু বরণ করতে হবে ট্যুরিস্ট বাস কর্মীদের। শুক্রবার পূর্ব বর্ধমান জেলার জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার এবং জেলা পরিবহণ আধিকারিকের কাছে ৩ দফা দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিলেন পূর্ব বর্ধমান ট্যুরিস্ট বাস শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন।
এদিন ইউনিয়নের সম্পাদক মীর আলাউদ্দিন জানিয়েছেন, গত প্রায় ২ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে ট্যুরিস্ট বাস। ২ বছর ধরে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের জীবনধারণের খরচ দিলেও আর তাঁরা দিতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এই অবস্থায় জেলার কয়েকশো শ্রমিকের ভবিষ্যত অন্ধকারে। তিনি জানিয়েছেন, করোনাকালে তাঁরা সরকারি কাজে সহায়তা করেছেন। কিন্তু তার বদলে তাঁদের কপালে জুটেছে কেবলই বঞ্চনা। সমস্ত সেক্টর খুললেও ট্যুরিস্ট স্পট কিংবা ট্যুরিস্ট বাস চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। এরফলে তাঁরা সংকটের মুখে পড়েছেন। এদিন জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিতে এসে রীতিমত কান্নায় ভেঙে পড়েন মীর আলাউদ্দিনরা। তাঁরা জানিয়েছেন, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তাঁদের আত্মহত্যা করতে হবে। তিনি জানিয়েছেন, করোনা বিধি মেনে ট্যুরিস্ট স্পটকে খুলে দেওয়া, ট্যুরিস্ট বাস চলাচল করতে দেওয়া এবং নাইট কার্ফুতে ট্যুরিস্টবাসকে চলতে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। একইসঙ্গে সরকারিভাবে তাঁদের সাহায্য দেওয়ারও আবেদন জানানো হয়েছে।
এরই পাশাপাশি মালিকপক্ষের তরফ থেকে কৌশিক চ্যাটার্জী জানিয়েছেন, লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে তাঁরা ট্যুরিস্ট বাস কিনেছেন। এখন বছরে এই বাসের জন্য ঋণের টাকা সহ আনুষঙ্গিক টাকা দিতে বছরে ২ লক্ষ টাকা লাগছে। অথচ ২ বছর ধরে বন্ধ ট্যুরিষ্ট বাস পরিষেবা। ব্যাঙ্ক, বীমা সংস্থা কেউই তাঁদের ছেড়ে কথা বলছেন না। অন্যদিকে, সরকার বাস চালাতে দিচ্ছে না। ফলে তাঁরা চরম সমস্যার মুখে পড়েছেন। অবিলম্বে সরকার কোভিড বিধি মেনে ট্যুরিস্ট বাস চলাচল এবং ট্যুরিস্ট স্পট খুলে না দিলে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে তাঁদের উপর।