পূর্ব বর্ধমান জেলার নজরকাড়া আসন বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী করা হল বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলার খোকন দাসকেই। আর শুক্রবার দুপুরে প্রার্থী ঘোষণার পরই জায়গায় জায়গায় প্রার্থীদের নিয়ে চলল অকাল হোলি, নির্বাচনের আগেই বিজয় উল্লাস। এদিন প্রার্থী ঘোষণার পরই বর্ধমান টাউনহল থেকে বিশাল মিছিল করেন বর্ধমান দক্ষিণের প্রার্থী খোকন দাস। যদিও তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিরোধীরা নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগ তুলেছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রার্থী ঘোষণার পর এত দ্রুত কিভাবে এই মিছিলের অনুমোদন পেল? যদিও এব্যাপারে খোকন দাসের অনুগামীরা জানিয়েছেন, তাঁরা আগেই একটি মিছিলের অনুমোদন নিয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে বাড়তি খোকন দাস প্রার্থী হওয়ায় কর্মী সমর্থকদের উল্লাস বেড়েছে। এদিন সবুজ আবির খেলে খোকন দাসকে নিয়ে মিছিল এগিয়েছে। খোকন দাস জানিয়েছেন, তিনি জেতার ব্যাপারে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত। বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্র মমতা ব‌্যানার্জ্জীকে উপহার দেবেনই। তিনি জানিয়েছেন, তিনি জিতলে বর্ধমান শহরের যানজটের সমস্যার প্রতি সবার আগে নজর দেবেন। এছাড়াও কয়েকটি ছোটখাটো সমস্যা রয়েছে সেগুলি মেটানোর চেষ্টা করবেন।

এদিকে এদিন প্রার্থী ঘোষণার পর রায়নায় শম্পা ধাড়া এবং ভাতাড়ে তৃণমূল প্রার্থী মানগোবিন্দ অধিকারীকে নিয়ে সবুজ আবির খেলেছেন এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকরা। ভাতাড়ে সুভাষ মণ্ডলকে এবার আর টিকিট দেওয়া হয়নি। অপরদিকে, পূর্ব বর্ধমান জেলার ১৬টি আসনে যে প্রার্থী তালিকা তৈরি হয়েছে তার মধ্যে কয়েকজন প্রার্থী নিয়ে কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ এদিনই ফুটে উঠেছে। গলসি কেন্দ্রে এবারে প্রার্থী করা হয়েছে রায়না কেন্দ্রে রেকর্ড ভোটে জেতা নেপাল ঘড়ুইকে। নেপাল ঘড়ুইয়ের জায়গায় রায়নায় প্রার্থী করা হয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়াকে।

অন্যদিকে, গলসির বিধায়ক অলোক মাঝিকে প্রার্থী করা হয়েছে জামালপুর কেন্দ্রে। যা নিয়ে জামালপুরে কর্মীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ শুরু হয়েছে। কারণ জামালপুর থেকে আগেই ভূমিপুত্র প্রার্থী করার দাবি উঠেছিল। মেমারিতে প্রার্থী করা হয়েছে প্রাক্তন শিক্ষক তথা মেমারি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মধুসূদন ভট্টাচার্য্যকে। নার্গিস বেগমকে এবারে আর টিকিট দেওয়া হয়নি। খণ্ডঘোষে নবীন বাগকেই দ্বিতীয়বারের জন্য প্রার্থী করা হয়েছে। বর্ধমান উত্তর কেন্দ্রে ফের প্রার্থী করা হয়েছে নিশীথ মালিককে। এই কেন্দ্রেও কর্মীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কালনায় প্রার্থী করা হয়েছে কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান দেবীপ্রসাদ বাগকে। মন্তেশ্বরে প্রার্থী করা হয়েছে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীকে। মঙ্গলকোটে সিদ্দিকুল্লাহ এবার আর দাঁড়াতে চাননি। মঙ্গলকোটে প্রার্থী করা হয়েছে মঙ্গলকোটের ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী ওরফে অচলকে। কাটোয়ায় ফের প্রার্থী করা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জ্জীকে। কেতুগ্রামে সেখ শাহনওয়াজ এবং আউশগ্রামে অভেদানন্দ থাণ্ডারকেই ফের প্রাথী করা হয়েছে। পূর্বস্থলী উত্তর বিধানসভায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে প্রাক্তন বিধায়ক তপন চ্যাটার্জ্জীকে। পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে এবারও প্রার্থী হয়েছেন স্বপন দেবনাথ।

এবারের এই প্রার্থী তালিকায় প্রাক্তন বিধায়কদের মধ্যে সুভাষ মণ্ডল এবং নার্গিস বেগম বাদ পড়েছেন। ১৬টি আসনের মধ্যে একটিমাত্র আসন রায়নায় মহিলা প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। নতুন মুখ আনা হয়েছে মঙ্গলকোট, কালনা, মেমারি, ভাতাড়, রায়না এবং বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রে। বাকি সব আসনেই পুরানো মুখ। দুটি আসন গলসি ও জামালপুরে রদবদল হয়েছে।

Like Us On Facebook