চিকিৎসার অবহেলায় এক রোগী মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুর থেকে উত্তেজনা ছড়াল বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কার্যত, রোগীপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় পুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের হাতাহাতিও হল। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্ধমান থানার দক্ষিণ মীরছোবা এলাকার বাসিন্দা রঘুনাথ দেহেরি (৬৫)কে রবিবার রাত্রে শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা এবং বমির উপসর্গের জন্য বর্ধমান হাসপাতালের রাধারানী ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রঘুনাথ দেহেরির ছেলে শম্ভুনাথ দেহেরি এবং মেয়ে মঙ্গলা দাস উভয়েই এদিন জানিয়েছেন, রবিবার রাতে ভর্তি করার পর ওয়ার্ডে কোনো চিকিৎসকই ছিলেন না। তাঁদের অভিযোগ, চিকিৎসক না থাকায় কর্তব্যরত হাউসস্টাফরা তাঁদের জানান, রঘুনাথবাবুর মাথার চিকিৎসা করাতে হবে। এরপর রোগীকে দুটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। দেওয়া হয় অক্সিজেন ও স্যালাইনও। এরপর সোমবার সকালে ওই ওয়ার্ডে এসে কর্তব্যরত এক চিকিৎসক তাঁদের জানান, রঘুনাথবাবুর ব্রেন স্ট্রোক হয়েছে। অবস্থা খারাপ। স্ক্যান করতে হবে। সেইমত তাঁর চিকিৎসা করাতে হবে। শম্ভুনাথবাবু জানান, এরপরই তাঁরা ওই চিকিৎসকে স্ক্যান করার কথা লিখে দিতে বললেও তিনি তা না লিখেই চলে যান। শম্ভূনাথবাবু জানিয়েছেন, তাঁরা এদিন সকাল ১১টা নাগাদ হাসপাতাল সুপারের কাছে তাঁর বাবার চিকিৎসা হচ্ছে না বলে অভিযোগ জানান। এরপর ১১টা ১৫ নাগাদ তাঁর বাবা মারা যান। আর এরপরেই শুরু হয় গোলমাল। রোগীপক্ষের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক ধস্তাধস্তি শুরু হয়। রোগীপক্ষের হাতে আক্রান্ত হন পুলিশ কর্মী সহ সিভিক ভলেণ্টিয়াররাও। এরপর বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে সকলকে সরিয়ে দেয়।
এই ঘটনায় হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডা. অমিতাভ সাহা জানিয়েছেন, রবিবার রাতে রঘুনাথবাবু হাসপাতালে ভর্তি হন। রঘুনাথবাবুর ব্রেন স্ট্রোক হয়েছিল। কার্যত ব্রেন কোমায় চলে যাচ্ছিল। অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তা বাড়ির লোকদেরও জানানো হয়েছিল। তিনি জানিয়েছেন, চিকিৎসার কোনো ত্রুটি হয়নি। সমস্ত রকম চিকিৎসাই তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। এব্যাপারে রোগীপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রয়োজনে তদন্ত কমিটিও তৈরী করা হবে।