শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ পূর্ব বর্ধমানের সদরঘাটে দামোদরের জল দেখতে গিয়েছিলেন বছর বাষট্টির তপতি চৌধুরী। সেখানে আইসক্রিম খেয়ে হাত ধুতে যান দামোদরের জলে। আচমকাই পাড় ধসে তলিয়ে যান খরস্রোতা দামোদরে। তারপরেই শুরু হয় বাঁচার লড়াই। তিনি ভাবতেও পারেন নি এই লড়ায়ে বাঁচা সম্ভব হবে তাঁর পক্ষে। একদিকে দামোদরের স্রোত অন্যদিকে বয়স জোড়া লড়াই চলতে থাকে প্রায় ১২ঘন্টা ধরে। সারা রাত ধরে মনের জোরেই চেষ্টা করে গেছেন কোনো রকমে পাড়ে উঠতে কিন্তু তা সম্ভবপর হয়নি স্রোতের কারণে। চেষ্টা করেছেন মাঝিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে কিন্তু তাও সম্ভব হয়নি। তাঁর ডাক শুনতে পাননি মাঝিরা। এইভাবে সারা রাত ধরে লড়াই চালিয়ে তিনি ততক্ষণে পৌছে গেছেন মুন্ডেশ্বরী নদীর হুগলীর মারকুন্ডা ঘাটে। যার দুরত্ব বর্ধমান থেকে প্রায় ৮০ কিমি। সেখানেই মাঝ নদীতে তাঁকে ভাসতে দেখেন কিছু জেলে। তাঁরাই তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন পাড়ে। সেখানেই চলে চিকিৎসাও। খবর যায় স্থানীয় পঞ্চায়েত ও থানায়। পরে তাঁরাই যোগাযোগ করেন তপতী দেবীর পরিবারের সঙ্গে। দ্রুত সেখানে পৌছায় পরিবার। পরে পঞ্চায়েতের হস্তক্ষেপেই তপতী দেবীকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাড়ি পৌঁছতেই তপতীদেবীর মুখ থেকে তার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শুনে হতবাক হয়ে পড়েন পরিবার থেকে প্রতিবেশী সকলেই। অবাক হয়ে সকলের তখন একটাই কথা এটা মিরাক্যাল। আর বাষট্টি বছরে সেই মিরাক্যালই করে দেখালেন পূর্ব বর্ধমানের কালিবাজার আমতলার তপতী চৌধুরী। আর তাঁকে ফিরে পেয়ে খুশি চৌধূরী পরিবার। তপতি চৌধুরী বলেন, ‘ছোটবেলায় সাঁতারটা শিখেছিলাম, তাই ১২ ঘন্টা ধরে ভেসে থাকতে পেরেছি।’
Like Us On Facebook