বর্ধমানের গোদার জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত মামলায় ক্ষতিপূরণ বাবদ জমির মালিককে টাকা না দেওয়ায় বর্ধমানের জেলাশাসককে সিভিল জেলে পোড়ার নির্দেশের উপর চলতি বছরের আগামী ২২ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার গোদার জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত মামলায় বর্ধমান আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক সেখ মহম্মদ রেজা বর্ধমানের জেলাশাসককে সিভিল জেলে পোড়ার নির্দেশ দেন। আগামী সোমবার জেলাশাসককে স্বশরীরে আদালতে হাজির হবারও নির্দেশ দেন। এই ঘটনায় গোটা জেলা জুড়েই প্রশাসনিক মহলে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় শুক্রবারই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে অ্যাডভোকেট জেনারেল স্থগিতাদেশের আবেদন জানান। হাইকোর্ট সেই আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ২২ নভেম্বর ফের মামলার শুনানির দিন ধার্য্য করেছে।
জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতেই বর্ধমান আদালতের ওই নির্দেশের কপি তিনি হাতে পান। এরপরই হাইকোর্টে শুক্রবার স্থগিতাদেশের আবেদন জানানো হয়। মহামান্য হাইকোর্ট সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। অন্যদিকে, গোদার ওই জমি অধিগ্রহণে জমির মালিকের ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত মামলায় আদালতে মিথ্যা হলফনামা দেওয়ায় বর্ধমানের সহকারী ভূমি অধিগ্রহণ আধিকারিক রমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কেস রুজু করলেন বর্ধমান আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সেখ মহম্মদ রেজা। শুক্রবার তিনি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। মামলা নথিভুক্ত করে সিজেএম তা বিচারের জন্য ষষ্ঠ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে পাঠিয়ে দেন। আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য ও হলফনামা জমা দেওয়ায় সরকারি ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে আইপিসি ১৯৩ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এই মামলায় সাক্ষী হিসাবে রাখা হয়েছে জমির মালিক আব্দুল হালিম এবং তাঁর আইনজীবী অমিয় চৌধুরীকে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ এই মামলায় ওই সরকারি আধিকারিক আদালতে একটি হলফনামা দাখিল করে জানান, কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলার শুনানিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। কিন্তু পরে জানা যায়, হাইকোর্ট আদপেই কোনো স্থগিতাদেশ জারি করেন নি। উল্টে জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা রেজিষ্টার জেনারেলের কাছে জমা পড়ার আবেদনই হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় ওই আধিকারিকের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়। তিনি ভুল হয়ে গেছে বলে স্বীকারও করেন। কিন্তু আদালতকে বিভ্রান্ত করা এবং জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ জমির মালিককে না দিয়ে নানা অছিলায় কালক্ষেপ করার এই ঘটনায় বিচারক সেখ মহম্মদ রেজা ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে সিজেএমের কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন।