এ এক আজব নেশা। সে সময় কারও বাড়িতে চিঠি এলেই ছুটে যেতেন তিনি। না চিঠির বিষয়বস্তুর টানে নয়, চিঠির খামে লাগানো ডাকটিকিটের নেশায়।পাড়া প্রতিবেশী থেকে বন্ধু-বান্ধব সবার বাড়িতে চিঠি এলেই আবদার একটাই – প্লিজ খামে লাগানো ডাকটিকিটটা দিন। ১৯৭৬ সাল, ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় থেকেই এভাবে ডাকটিকিট সংগ্রহের কাজ শুরু করেন পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলীর পারুলিয়া বাজারের বাসিন্দা সুধীর সাহা। এখন তাঁর সংগ্রহশালায় প্রায় দেড় হাজার ডাকটিকিট। লন্ডন, প্যারিস, হংকং থেকে দেশের বিভিন্ন সময় প্রকাশিত ডাকটিকিট জায়গা করে নিয়েছে তাঁর সংগ্রহে।

পালস পোলিও টিকাকরণের সূচনালগ্নে প্রকাশিত ডাকটিকিট, বিভিন্ন বিপ্লবীদের নামে প্রকাশিত ডাকটিকিট, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর ৫০০ তম জন্মতিথিতে প্রকাশিত ডাক টিকিটও জায়গা করে নিয়েছে তাঁর সংগ্রহে। আর সেই সংগ্রহশালা দেখতে পাড়ি জমান সমগ্র জেলাসহ ভিন জোলারও মানুষজন। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ডাকটিকিটের ইতিহাস বোঝাতে মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন স্কুলে ডাক পড়ে সুধীরবাবুর। এমনকি একাধিক প্রদর্শনীতেও তাঁর সংগ্রহ তুলে ধরা হয়। ইতিমধ্যেই ভারতীয় পোস্টাল বিভাগের বাহবাও পেয়েছেন তিনি। পোস্টাল বিভাগের একাধিক প্রদর্শনীতেও তিনি অংশ নিয়েছেন। তবে বর্তমান সময়ে চিঠির আর তেমন প্রচলন না থাকায় সংগ্রহ বাড়াতে না পেরে কিছুটা হলেও মন খারাপ সুধীরবাবুর। তাই বর্তমান প্রজন্মকে ডাকটিকিট সম্পর্কে অবহিত করার জন্য তিনি একটি সংগ্রহশালা করতে চান। কিন্তু আর্থিক অনটনে তা করা যাচ্ছে না বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে তিনি তাঁর লক্ষ্যে অবিচল। সেই লক্ষ্যের জন্য পরম যত্নে আগলে রেখেছেন তাঁর সংগ্রহে থাকা ডাকটিকিটগুলিকে। পাশে পেয়েছেন তার পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবদেরও।


Like Us On Facebook