করোনা আবহে কোন এলাকাকে বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে দেখলেই এতদিন মানুষ বুঝতে পারতেন ওই এলাকায় করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছে। কিন্তু একেবারেই অন্য চিত্র এবার বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার চরমানা গৈতানপুর এলাকায়। দামোদরের তীরের এই বসতি এলাকায় কনটেন্টমেন্টের রূপটাই সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাঁশ দিয়ে এলাকাকে ঘিরে দেওয়ার বদলে দেখা দিয়েছে কৃত্রিম মাকড়সার জাল। এই মাকড়সার জাল আর ফণিমনসা গাছের কাণ্ড দিয়ে তৈরি মাকড়সাই এখন এলাকার মানুষকে প্রতিমুহূর্তে সতর্ক করছে সাধারণ মানুষকে করোনার প্রকোপ নিয়ে। উদ্যোক্তা পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর বিদ্যানগর কলেজের অধ্যাপক চরমানা গৈতানপুরের বাসিন্দা রঙ্গজীব রায়।
তিনি জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে তাঁর পাড়ায় একজনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। যথারীতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই এলাকাকে কনটেনমেন্ট জোন করা হয়। কিন্তু তারপরেও তিনি দেখছিলেন অনেকেই সচেতন নন। রাস্তা দিয়ে মানুষের আনাগোনা চলছেই। আর তাই তিনি তাঁর শৈল্পিক চিন্তাভাবনা দিয়ে এই অভিনব কনটেনমেন্ট জোনের বেড়া তৈরি করেছেন। নাইলন দড়ি দিয়ে তৈরি করেছেন মাকড়সার জাল। তাতে ব্যবহার করেছেন অব্যবহৃত চুরি। আর জালের মাঝে তিনি ফণিমনসা গাছের কাণ্ড দিয়ে তৈরি করেছেন মাকড়সা। যা দিয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন করোনা ভাইরাস আসলে একটা জালের মত বিষয়। ক্রমশই তা ছড়িয়ে পড়ছে। আর করোনা ভাইরাসের আক্রমণকে বোঝাতে বিষাক্ত ফণিমনসার কাঁটাকে ব্যবহার করেছেন। আর এই জালের ফলে এলাকার মানুষ সতর্কও হয়েছেন।
এলাকার বাসিন্দা সঞ্জীব রায়, সুচিত্রা ঢালি প্রমুখরা জানিয়েছেন, রঙ্গজীব মাস্টারমশাইয়ের এই অভিনব বেড়ার ফলে এলাকার মানুষ সত্যিই ঘরবন্দি হয়েছেন। কারণ এই এই মাকড়সার জাল কেবল রাস্তাতেই নয় নির্দিষ্ট করোনা আক্রান্ত পরিবারের আশপাশের প্রায় ৫০ মিটার পর্যন্ত সমস্ত বাড়ির সামনেই তিনি এই জাল বুনেছেন যাতে বাড়ি থেকে কেউ বের হতে না পারেন। বস্তুত, রঙ্গজীববাবুর এই অভিনব উদ্যোগকে ঘিরে এখন গোটা এলাকায় শুরু হয়েছে চর্চা।