হড়পা বানে বিধ্বস্ত সিকিমে পূর্ব বর্ধমানের অন্তত ১৮ জন আটকে পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই পর্যটক বলে জানা গেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের দাবি, আটকে থাকা পরিবারগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সবাই ভাল আছেন। তবে বর্ধমান শহরের রাধানগর ষষ্ঠীতলা ও মেমারির আলিপুর গ্রামের দু’জনের ‘খোঁজ’ এখনও পরিবার-পরিজনরা পাননি। আটকে থাকা বাকিদের মধ্যে বেশিরভাগই বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। ফলে, প্রতিটি পরিবারই উদ্বেগে রয়েছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সিকিমে আটকে পড়েছেন এমন ১৮ জনের তথ্য এখনও পর্যন্ত পাওয়া গেছে। জেলার কন্ট্রোল রুম ও পুলিশের মাধ্যমে তাঁদের সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দফতর থেকেও পরিজনদের ফোন করে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে, আটকে থাকা মানুষজনের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সিকিমে আটকে পড়া মানুষজনের মধ্যে বর্ধমান, আউশগ্রাম, বুদবুদ, কাটোয়ার বাসিন্দারা রয়েছেন। আউশগ্রামের অমরারগড়ের আগমনি ঘোষ মণ্ডল সপরিবারে সিকিম বেড়াতে গিয়েছেন। তাঁর মা ভগবতী ঘোষ বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে কথা হয়েছে। তারপর থেকে আর ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে দু’টো নাগাদ একবার ফোন এলেও কোনও কথা শোনা যায়নি।’ আগমনির বোন জয়ার কথায়, ‘ওরা গুরুদোংমার গিয়েছিল মঙ্গলবার। সে দিন রাতে লাচুং বা লাচেনে থাকার কথা ছিল। কোথায় ছিল আমরা জানি না। বুধবার জিরো পয়েন্ট ঘুরে গ্যাংটকে নামার কথা ছিল। এখন কোথায় আটকে আছে জানি না।’ বন্ধুদের সঙ্গে সিকিম বেড়াতে গিয়েছেন বর্ধমানের পায়েল মণ্ডল। তাঁর দিদি আসানসোলের বাসিন্দা নূপুর মন্ডল বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে সরাসরি পায়েলের কথা হয়নি। ট্র্যাভেল এজেন্ট ফোন করেছিল। তিনি এখন কাশ্মীরে আছেন। ভাল করে কোনও কথা শোনা যায়নি।’
মেমারির আলিপুরের বিপ্লব রায় সপরিবারে গত শনিবার সিকিম গিয়েছেন। মঙ্গলবার রাত ৯টার সময় বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তারপর থেকে ফোন বন্ধ থাকায় পরিজনদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল। বিপ্লবের দাদা আশিস রায় বলেন, ‘শুক্রবার দুপুরে জানতে পেরেছি, ওরা মিলিটারির একটি ক্যাম্পে রয়েছে। সেটা কতটা সঠিক বলতে পারছি না।’ রায়নার সুকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মসূত্রে মে মাস থেকে লাচুংয়ে রয়েছেন। তাঁর জামাইবাবু, বর্ধমানের শতাব্দী বাগের বাসিন্দা রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘সেনাবাহিনীর ফোন থেকে একজন ভালো আছে বলে খবর দিয়েছেন। তবে সঙ্গে থাকা ছোলা-মুড়ি খেয়েই থাকতে হচ্ছে।’ অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘সিকিমে কারা আটকে আছেন, তার বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’