দীর্ঘ প্রায় ২২ মাস পর পড়ুয়াদের জন্য খুললো স্কুলের দরজা। করোনা সংক্রমণের হার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসতেই রাজ্য সরকারের নির্দেশে মঙ্গলবার থেকে স্কুল খুলল। গত কয়েকদিন ধরেই স্কুলে স্কুলে চলেছে স্যানিটাইজ করার কাজ। কিন্তু তারই মাঝে পূর্ব বর্ধমান জেলার বেশ কিছু স্কুলের শৌচাগার পরিষ্কার নিয়ে রীতিমত চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশ কিছু স্কুলে স্থায়ী শৌচাগার কর্মী না থাকায় এবং করোনা জনিত কারণে অনেকেই অন্যত্র কাজে নিয়োজিত হওয়ায় সেই সমস্ত স্কুলগুলিতে কিভাবে নিত্যদিনের শৌচাগার পরিষ্কারের কাজ হবে তা নিয়ে চিন্তিত এখন স্কুল কর্তৃপক্ষগুলি।
এদিকে, মঙ্গলবার গোটা রাজ্যের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও স্কুলে আসতে পেরে খুশির হাওয়া পড়ুয়াদের মধ্যে। বন্ধুদের পাশে পেয়ে রীতিমত আনন্দে মেতে উঠলো ছাত্রছাত্রীরা। অন্যদিকে, কোভিড বিধিকে মানতে এদিন জায়গায় জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী, নেতৃত্বরা স্কুলের সামনে মাস্ক ও স্যানিটাইজার নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। বর্ধমান শহরের ৪নং ওয়ার্ডের দুবরাজদিঘি হাইস্কুলের সামনে এদিন হাজির হন তৃণমূল নেতা সেখ নুরুল আলমের নেতৃত্বে তৃণমূল যুব ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা। তাঁরা ছাত্রছাত্রীদের হাতে স্যানিটাইজার এবং মাস্ক তুলে দেন। অন্যদিকে, বিদ্যার্থী বয়েজ স্কুলে এদিন হাজির হন বর্ধমান দুর্গাপুজো সমন্বয় সমিতির সদস্যরা। তাঁরাও ছাত্রদের হাতে স্যানিটাইজার এবং মাস্ক সহ গোলাপ ফুল তুলে দেন।
এদিন দুর্গাপুরের বিভিন্ন কলেজ ও স্কুল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য বিধি মেনে পঠন পাঠন শুরু করে। তবে এরমধ্যে নজর কাড়লো দুর্গাপুরের হিন্দি ভাষার একটি স্কুল। দুর্গাপুরের নেপালি পাড়ি হিন্দি হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ হ্যান্ডওয়াশ ও স্যানিটাইজারের ব্যবস্থার পাশাপাশি স্কুলে ঢোকার আগে পড়ুয়াদের ফুল দিয়ে বরণ করল। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা পড়ুয়াদের উপর ফুল ছড়িয়ে স্কুলে তাঁদের অভ্যর্থনা জানান।
করোনার বিধিনিষেধ মেনেই মঙ্গলবার সকালে কাঁকসা উচ্চ বিদ্যালয় সহ কাঁকসার সমস্ত বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রবেশ করানো হয়। প্রতিটি বিদ্যালয়ের সামনে সাদা রঙের বলয় তৈরি করে ছাত্রছাত্রীদের দাঁড় করানো হয়। লাইন দিয়ে প্রত্যেক পড়ুয়ার হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে তবেই বিদ্যালয় প্রবেশ করানো হয়। আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়েই শুরু হয়েছে পঠন-পাঠন। দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয়ে আসতে পেরে খুশি ছাত্র-ছাত্রীরা। তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে ঘরে বসে তেমনভাবে পড়াশোনা হতো না। কাঁকসা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক উজ্জল নন্দী জানিয়েছেন, তাঁরা সরকারি বিধি নিষেধ মেনে পঠন-পাঠন শুরু করেছেন এবং বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের দূরত্ব বজায় রেখে বসিয়ে ক্লাস করানো হচ্ছে। প্রথম দিন তাই ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৪০ শতাংশ হলেও আগামী দিনে তা আরও বাড়বে বলে অনুমান তাঁর।