সর্দিকাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে একের পর এক শিশু ভর্তি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে বর্ধমান হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই উপসর্গগুলো নিয়ে প্রতিদিন গড়ে ১০০-১২০ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালের শিশু বিভাগে। বাড়তি চাপ সামলাতে বেড বাড়ানোর ভাবনা চলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। কি কারণে এই সমস্যা হঠাৎ ব্যাপক বেড়েছে তা জানতে হাসপাতালের তরফে নমুনা পাঠানো হল পরীক্ষাগারে (ল্যাবরেটরীতে)।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২ সপ্তাহ ধরে জ্বর, সর্দিকাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তির সংখ্যা প্রচুর বেড়ে গেছে। গত ২ সপ্তাহে প্রায় ১৪০০ মতো শিশু এই সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছে। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে ১২০ জন শিশুকে ভর্তি করতে হচ্ছে। সাধারণত ৬ মাস থেকে ১২ বছর পর্যন্ত শিশুদেরই এই ধরণের সমস্যা বেশী হচ্ছে। ৫ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে সুস্থ হতে। আগে যেখানে ২-৩ দিন সময় লাগতো সারতে।

যদিও এই সমস্যা নিয়ে এখনও কোন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। তবে এদিকে যেমন প্রতিনিয়ত রোগীর চাপ বাড়ছে তেমনই এক এক জনকে যেহেতু ৫ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত ভর্তি রাখতে হচ্ছে তাই প্রয়োজনীয় বেডের ব্যবস্থা করতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। ফলে একটি বেডে ২ জন এমনকি ৩ জন করেও শিশুকে ভর্তি নিতে হচ্ছে। তাই প্রাথমিকভাবে করোনার সময় যে বাড়তি বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছিল সেগুলি ছাড়াও নতুন করে আবার বেড বাড়ানোর পরিকল্পনার নেওয়া হয়েছে।

বর্ধমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ তথা শিশু বিশেষজ্ঞ কৌস্তভ নায়েক জানিয়েছে, এটা শুধু বর্ধমান হাসপাতাল নয়, রাজ্যজুড়েই হাসপাতালগুলিতে এই সমস্যা নিয়ে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সাধারণত বছরের এই সময়টাই ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে শিশুদের এই সমস্যা দেখা গেলেও এটা ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ নয়। তবে এটি একটি ভাইরাস ঘটিত রোগ। তাই কোন্ ধরণের ভাইরাসের ফলে এই সমস্যা হচ্ছে তা জানতে আক্রান্তদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সেই নমুনা ভাইরাস রিসার্চ ডায়গনিস্টিক ল্যাবরেটরী (VRDL)তে পাঠানো হয়েছে। আশাকরি আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে সেই রিপোর্ট চলে আসবে। তবে এতে আতঙ্কিত বা ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

কেন এই সমস্যা?
এই ধরণের ভাইরাস দ্বারা আক্রান্তের ফলে প্রথমে সর্দিকাশি ও জ্বর হলেও পরে শ্বাসনালী সংকুচিত হয়ে পড়ছে তাই শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।

এই সমস্যার চিকিৎসা কি?
সাধারণত শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হলে যে ধরণের চিকিৎসা ও মেডিসিন দরকার হয় তাই করা হচ্ছে। ইনহেলার ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।

কি কি সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত?
সাধারণত এই রোগটি ছোঁয়াচে। তাই আক্রান্তের কাছ থেকে দূরে থাকাই ভাল। এছাড়া মাস্ক পড়তে হবে ও ভিড় এড়াতে হবে এবং ঘন ঘন হাত সাবান জল দিয়ে ধুতে হবে।

কোভিডের সঙ্গে কি এর কোন সম্পর্ক আছে?
এখনই বলা সম্ভব নয়। তারজন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন। তারপরে সঠিকভাবে বলা যাবে বলে জানা গেছে।

Like Us On Facebook