বর্ধমান রেল স্টেশনে চলন্ত ট্রেন থেকে লাগেজ সহ এক মহিলা যাত্রী প্ল্যাটফর্মে নামতে গিয়ে পা পিছলে ট্রেনের নীচে পড়ে যাচ্ছিলেন, মুহুর্তের মধ্যে সেই দৃশ্য দেখে অতি দ্রুততার সঙ্গে মহিলার হাত ধরে টেনে তুলে আনলেন প্লাটফর্মে কর্তব্যরত রেল সুরক্ষা বাহিনীর অফিসারেরা। আরপিএফের অফিসারেরা কার্যত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে দিলেন ওই মহিলা যাত্রীকে বলেই জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক যাত্রী।
আরপিএফ বর্ধমান পোস্ট সূত্রে জানা গেছে, ‘মিশন জীবন রক্ষা’ কর্মসূচির অধীনে আরপিএফ বর্ধমান পোস্টের কনস্টবেল দীনানাথ এবং কনস্টবেল একে রাম যাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্বে বৃহস্পতিবার দুপুরে বর্ধমান রেলওয়ে স্টেশনের ৫নম্বর প্ল্যাটফর্মে টহল দিচ্ছিলেন। তাঁদের ডিউটি চলাকালীন হঠাৎ লক্ষ্য করেন ট্রেন নম্বর 12024 (ডাউন পাটনা – হাওড়া জনশতাব্দী এক্সপ্রেস) থেকে এক মহিলা যাত্রী চলন্ত ট্রেন থেকে প্ল্যাটফর্মে নামার চেষ্টা করছেন। ট্রেনটির বর্ধমানে স্টপেজ না থাকায় থ্রু বেরিয়ে যাচ্ছিল। এইসময় ওই মহিলা স্টেশনে নামার চেষ্টা করতেই পা পিছলে ট্রেনের নীচে প্রায় ঢুকে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ঘটনাচক্রে ওই বগির একদম কাছেই আরপিএফের ওই দুই কনস্টবেল হাজির থাকায় ঘটনাটি দেখতে পেয়ে দৌড়ে গিয়ে ওই মহিলার হাত ধরে টেনে প্ল্যাটফর্মে তুলে আনেন। নির্ঘাত মৃত্যুর হাত থেকে মহিলার প্রাণ বাঁচিয়ে দিয়েছেন আরপিএফের কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা বলেই প্লাটফর্মে উপস্থিত অন্যান্য যাত্রীরা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে আরপিএফের পুলিশ কর্মীদের যাত্রীদের প্রতি এই সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গির ভুয়সী প্রশংসা করেছেন তাঁরা।
আরপিএফ বর্ধমান পোস্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই মহিলা যাত্রীর নাম সুনিতা সিং। তাঁর বাড়ি আসানসোলের হীরাপুর থানার বুধা পানি ট্যাঙ্কি, ৪নং লেন। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে সুনিতা দেবী জানিয়েছেন, তিনি তাঁর পায়ে খুব ছোটখাটো আঘাত পেয়েছেন। তবে আরপিএফের তরফ থেকে তাঁর চিকিৎসা করানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও তিনি তার প্রয়োজন নেই বলেই জানিয়েছেন। এদিকে চোখের সামনে নিজে সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে রেল সুরক্ষা বাহিনীর অফিসারদের কুর্নিশ জানাতে ভোলেননি। ভবিষ্যতে এমন ভুল যে আর তিনি কোনদিন করার কথা ভাববেন না, তাও রেল পুলিশকে কথা দিয়েছেন।