কুলটির নিয়ামতপুরে পালিত হল আদিবাসীদের রথযাত্রা উৎসব। এদিন সিংরাই বাবার আশ্রম থেকে এই রথের দড়ির টান শুরু হয়। বহু আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ এই রথযাত্রায় সামিল হন। আদিবাসীদের এই রথে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা থাকে না। সিংরাই বাবাকে রথে চাপিয়ে সেই রথ টানেন ভক্তরা। এই রথ গোটা নিয়ামতপুর এলাকা পরিক্রমা করে। সিংরাই বাবার এই রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে মানুষের ঢল নামল নিয়ামতপুরে রাস্তায়। সব মিলিয়ে মহা ধুমধামে পালিত হল আদিবাসীদের এই রথযাত্রা উৎসব।
কে এই সিংরাই বাবা? তাঁর আসল নাম সিংরাই মারান্ডি। মাত্র উনিশ বছর বয়সে রুটি-রুজির টানে তৎকালিন বিহারের দুমকা থেকে চলে এসেছিলেন আসানসোলে। শিল্পাঞ্চলে থাকতে থাকতে ক্রমেই আদিবাসী সম্প্রদায়ের দেবতা মারাং বুরুর পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের নানা দেব-দেবীকে আদিবাসী সম্প্রদায়ে জনপ্রিয় করে তোলার কাজ শুরু করেন তিনি। এমনকি আদিবাসী সম্প্রদায়ের নতুন ধর্মগুরু হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠার কাজেও মন দেন তিনি।
বয়স যখন চল্লিশ, তখন হঠাৎ একদিন সকালে নিজেকে স্বপ্নাদেশপ্রাপ্ত ‘ধর্মগুরু’ বলে ঘোষণা করেন সিংরাই মারান্ডি। আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনকে ডেকে জানিয়ে দিলেন, স্বপ্নে তিনি আদেশ পেয়েছেন তিনিই সর্বশক্তিমান। তারপরই বানিয়ে ফেললেন বিশাল এক ‘সিঙ্গাবোঙ্গা’ মন্দির। আর সেই মন্দিরের ভিতর প্রতিষ্ঠা হলো সিংরাই বাবার বিশাল পাথরের মূর্তি। সিংরাই মারান্ডি রাতারাতি হয়ে গেলেন সিংরাই বাবা। ধীরে ধীরে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বহু মানুষ তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।