বাইরের কোলাহল বা গাড়ির আওয়াজ যাতে পশু পাখিদের বিরক্তির কারণ না হয়ে দাঁড়ায় সেজন্য বাবুরবাগ থেকে রমনাবাগানের পাশ দিয়ে যাওয়া রাস্তাকে সাধারণ মানুষের জন্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। কেবলমাত্র বনকর্মীরাই সে পথে যাতায়াত করতে পারবেন। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে চলেছে। কারণ, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই দর্শকদের সামনে খুলে দেওয়া হচ্ছে বর্ধমানের রমনাবাগান মিনি জু-কে।
দর্শক মনোরঞ্জনের জন্য চিড়িয়াখানাকে গত ২ বছর ধরেই ঢেলে সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। সম্প্রতি চিড়িয়াখানার এই কাজ খতিয়ে দেখতে এসে ৪৫দিনের নির্দিষ্ট সময়সীমাও দিয়ে যান জু অথরিটির আধিকারিকরা। দ্রুত কাজ শেষ করে আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই যাতে দর্শকদের সামনে এই চিড়িয়াখানাকে খুলে দেওয়া যায় সে ব্যাপারেও নির্দেশ দিয়ে যান।
উল্লেখ্য, বর্ধমানের এই রমনাবাগানের মিনি জু-কে পুরোপুরি ঢেলে সাজাতে কয়েকটি ধাপে কাজ শুরু করা হয়েছে। গেট পেরিয়ে জু-তে ঢুকলেই প্রথমে দেখা মিলবে লাপার্ডের। তারপর থাকছে শ্লথ বিয়ারের খাঁচা। ২টি শ্লথ বিয়ার থাকছে। প্রায় ৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে প্রথম ধাপে দর্শক মনোরঞ্জনের জন্য এভাবেই আকর্ষণীয় করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে বর্ধমানের এই দর্শনীয় স্থানকে। সম্প্রতি জু-এর কাজকর্ম খতিয়ে দেখতে আসেন জু অথরিটির অধিকর্তা বিনয় কুমার যাদব। তিনি গোটা এলাকা ঘুরে দেখেন।
রমনাবাগান সূত্রে জানা গেছে, বর্ধমানের এই জু-কে ঢেলে সাজাতে ইতিমধ্যেই ৩ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। জু অধিকর্তা এসে আরও ২০ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন। জেলা বনাধিকারিক দেবাশীষ মিশ্র জানিয়েছেন, বর্ধমানের এই রমনাবাগানের জু-এলাকাকে ৭ফুট উঁচু প্রাচীর দিয়ে এবং তার ওপর ৩ ফুটের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে আগামী ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যেই সাধারণ মানুষের জন্য এই জু-কে খুলে দেবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জু-এর গেট পার হয়ে প্রথমেই থাকছে দুটি চিতাবাঘ। তারপরে থাকছে দুটি শ্লথ বিয়ার। এরপরে থাকছে প্রায় ৩০টি চিতল হরিণ। শাম্বার হরিণও থাকছে। থাকছে পুকুরে ঘড়িয়াল। দর্শকদের বিশ্রাম নেবার জন্য থাকছে সেন্ট্রাল পার্ক, ফুড কোর্ট, কাফেটেরিয়াও। এখানেই থাকছে বিভিন্ন পশু পাখিদের সম্পর্কে জানার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও। নতুন করে তৈরী করা পাখিদের খাঁচায় থাকছে ময়ূর, সারসের মত বড় পাখি। থাকছে রেসার্স মাঙ্কি, লেঙ্গুর, বাঁদর, খরগোশ, সজারুও।
সম্প্রতি সাদা কুমীরটি মারা যাবার পর থেকেই দীর্ঘদিন ধরে নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করছিল কালো কুমীরটি। নতুন আরও একটি কুমীর নিয়ে আসার পাশাপাশি বর্তমান কুমীরের আবাসস্থান পুকুরটিকে আরও সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জু-এর বুক চিরে যাওয়া জলাধারকে সংস্কার করা হয়েছে। ভাল্লুকের জন্য তৈরী হচ্ছে কৃত্রিম গুহাও। অন্যদিকে, এতদিন রমনাবাগানে ঢোকার পর ডানদিকের পার্কটিকে তুলে দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয়
পর্যায়ে ওই এলাকাকে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।