গোটা বর্ধমান জেলা জুড়েই সরকারি নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প পেপারের কালোবাজারি নিয়ে অবশেষে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুরু হল লাগাতার হানাদারি। বুধবার বর্ধমান কোর্ট এলাকায় একাধিক জায়গায় হানা দিয়ে বাজেয়াপ্ত করা হল ৩০০ নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প পেপার সহ একাধিক স্ট্যাম্প। সিল করে দেওয়া হল কোর্ট চত্বরে থাকা দুটি গুমটি দোকানও। লাগাতার এই হানাদারির খবরে রীতিমত খুশী সাধারণ মানুষ।

এদিন পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অনির্বাণ কোলে জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁরা অভিযোগ পাচ্ছিলেন। তাই এদিন বর্ধমান সদর উত্তর মহকুমাশাসক দীপ্তার্ক বসুর নেতৃত্বে ট্রেজারী অফিসার এবং পুলিশ কর্মীদের নিয়ে হানা দেন বেশ কয়েকটি জায়গায়। যেখানে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে এই স্ট্যাম্প পেপার বিক্রি করা হচ্ছিল। এই ঘটনায় দুটি গুমটি দোকানকে সিল করে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে অবৈধভাবে স্ট্যাম্প পেপার বিক্রি করার দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। যদিও এরই মাঝে একজন পালিয়ে যায়। গোটা ঘটনায় বর্ধমান সদর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, জানা গেছে, বিশেষ করে বর্ধমান কোর্ট চত্বর এলাকায় সরকারি এই নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প পেপার নির্ধারিত মূল্যের অনেক বেশি মূল্যে বিক্রির রমরমা বাজার সৃষ্টি হয়েছে। ১০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার ১০০ টাকা, ২০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার ২০০ টাকায় এমনকি ৫০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার ৫০০ টাকাতেও বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষ রীতিমত প্রতারিত হয়েই চলেছেন। যা নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকাকে প্রশ্নের মুখেও দাঁড় করাতে কসুর করছেন না সাধারণ মানুষ। জানা গেছে, এদিন এই আচমকা হানাদারির আগে রীতিমত প্রস্তুতি নেন আধিকারিকরা। খদ্দের বেশে প্রথমে ওই সমস্ত জায়গা থেকে অতিরিক্ত দামে স্ট্যাম্প পেপার কেনা হয়। গোটা ঘটনাটি ভিডিও রেকর্ডিংও করা হয়। প্রায় সমস্ত তথ্য হাতে আসার পরই মহকুমা শাসকের নেতৃত্বে চলে অভিযান। এদিন অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, এই অভিযান চলবে। তিনি জানিয়েছেন, কেবলমাত্র অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করাই নয়, এদিন বাজেয়াপ্ত করা পেপারগুলি থেকে দেখা গেছে সেগুলি ভিন জেলার। তাই তাঁরা এ ঘটনাটিকে কঠোরভাবে দমন করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন। এদিন এরই পাশাপাশি কয়েকজন ভেণ্ডারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

Like Us On Facebook