খুনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ ধরল খুনিকে। গত ১ জুলাই বর্ধমানের নবাবহাটের শিবপুর দিঘিরপাড় এলাকার সেচখালের মধ্যে থেকে পুলিশ উদ্ধার করে প্রদীপ মাঝি (২৪) নামে এক যুবকের গলাকাটা দেহ। মৃত যুবকের বাড়ি সরাইটিকর এলাকায়। এই মৃতদেহ উদ্ধারের পরই শুরু হয় ব্যাপক চাঞ্চল্য। কি কারণে খুন তা নিয়ে শুরু হয় চর্চাও। কিন্তু ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বর্ধমান পুলিশ প্রদীপ মাঝির খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করল তারই বন্ধু নীরু মাঝিকে।

বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহ রায় জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্তে নামেন বর্ধমানের ডেপুটি পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) শৌভিক পাত্র এবং বর্ধমান থানার আইসি পিণ্টু সাহা। এরপরই প্রদীপ মাঝিকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে নীরু মাঝিকে আটক করা হয়। এরপর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই সত্য ঘটনা সামনে আসে। তিনি জানিয়েছেন, প্রদীপ মাঝি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। নীরু মাঝি একটি বাগানে মালির কাজ করেন। নীরু মাঝির স্ত্রীর সঙ্গে প্রদীপ মাঝির অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল প্রায় একবছরেরও বেশি সময় ধরে। গত জানুয়ারি মাসে আচমকাই নীরু মাঝির স্ত্রীকে নিয়ে প্রদীপ মাঝি ২দিনের জন্য উধাও হয়ে যান। এই বিষয়টিকে ভালভাবে মেনে নিতে পারেননি নীরু মাঝি। আর তাই বন্ধু প্রদীপ মাঝিকে খুনের পরিকল্পনা করতে থাকেন। এরপরই গত ১ জুলাই সকালে নীরু মাঝি প্রদীপকে মদ খাওয়ানোর নাম করে ডেকে নিয়ে যায় শিবপুর দীঘিরপাড় এলাকায় ক্যানেলের ধারে। সেখানেই মদ খাওয়ানোর পর ধারলো অস্ত্র দিয়ে সে প্রদীপ মাঝির গলা কেটে খুনে করে ক্যানেলের জলে ফেলে দেন। ওইদিনই বিকালে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, নীরু মাঝির বক্তব্যের সত্যতা জানতে এলাকায় খোঁজ খবরও নেওয়া হয়। এরপরই শুক্রবার গ্রেফতার করা হয় নীরু মাঝিকে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, নীরু মাঝি খুনের ঘটনা স্বীকার করেছে।

শনিবার ধৃত নীরু মাঝিকে আদালতে পেশ করে ৪দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানানো হয়। তাঁকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করবে পুলিশ। অপরদিকে, ওই একই দিনে কাঞ্চননগর এলাকায় যে যুবতীর আধপোড়া দেহ পুলিশ উদ্ধার করে, তাঁর পরিচয় এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। এব্যাপারেও ওই যুবতীর পরিচয় জানার পাশাপাশি কে বা কারা কি কারণে খুন করেছে সে ব্যাপারে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রাথমিক অনুমান ওই যুবতীকে বাইরে থেকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছিল।

Like Us On Facebook