জাল নোটের কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার বেড়ুগ্রাম থেকে এক জনকে গ্রেফতার করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। ধৃতের নাম জাকির শেখ। জানা গেছে, রবিবার রাতে বাড়ি থেকে এনআইএ তাকে গ্রেফতার করে। ধৃতের দু’টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে এনআইএ। জাল নোটের কারবারে তার সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত বলে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছেন এনআইএ-র গোয়েন্দারা।
বাংলাদেশ ও নেপাল থেকে জাল নোট এনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিচ্ছে একটি চক্র। চক্রের ৪ জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে এনআইএ। বাংলাদেশ ও নেপালের কয়েকজন জাল নোটের এই কারবারে জড়িত বলে জেনেছে এনআইএ। তাদের ধরতে দু’দেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন এনআইএ-র এক আধিকারিক। জাকির এর আগেও জাল নোট সহ ধরা পড়েছিল কলকাতায় কাস্টমসের গোয়েন্দাদের হাতে।
পূর্ব বর্ধমান ও আশপাশের জেলায় জাকির জাল নোট ছড়িয়েছে বলে এনআইএ-র গোয়েন্দাদের দাবি। সোমবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। তাকে শিলিগুড়িতে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় এনআইএ। সেজন্য ৩ দিন ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন জানায় এনআইএ। সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন সিজেএম সুজিত কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। ১ এপ্রিলের মধ্যে ধৃতকে শিলিগুড়ির এনআইএ আদালতে পেশ করে এ ব্যাপারে রিপোর্ট পেশ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন সিজেএম।
এনআইএ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি শিলিগুড়ির বাগডোগরার বিহার মোড় বাস স্টপ থেকে জাল নোট সহ মালদহের জগদীশপুরের বাসিন্দা গোলাম মোর্তুজা ওরফে সাজাতুর রহমানকে গ্রেফতার করেন রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্সের গোয়েন্দারা। ধৃতের কাছ থেকে ৪ লক্ষ ১ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার হয়। তার মধ্যে ২০০টি ২ হাজার টাকার এবং ২টি ৫০০ টাকার নোট ছিল। কাস্টমস এ নিয়ে একটি মামলা রুজু করে। পরে ৯ মার্চ ঘটনার গুরুত্ব বুঝে স্বরাষ্ট্র দফতর কেসের তদন্তভার এনআইএ-র হাতে তুলে দেয়। তদন্তে নেমে এনআইএ মহম্মদ বাইতুল্লাহ, মহম্মদ মুকতার আলম ও সাদেক মিঞাকে গ্রেফতার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এনআইএ গোয়েন্দারা জানতে পারেন, চক্রটি জাল নোট পাচার ও নানা ধরণের স্মাগলিংয়ে জড়িত। এছাড়াও সন্ত্রাসবাদী কাজকের্মও ধৃতরা জড়িত। বাংলাদেশ থেকে জাল নোট এনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিয়েছে চক্রটি। অত্যন্ত উন্নত মানের জাল নোট তৈরি করে চক্রটি। সাদা চোখে যা ধরা কার্যত বোঝা অসম্ভব। তদন্ত সম্পূর্ণ করে ৪ জনের বিরুদ্ধে জাল নোটের কারবারের পাশাপাশি আন ল’ফুল অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্টের ১৬, ১৮ ও ২০ ধারায় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করেছে এনআইএ।
এনআইএ-র এক আধিকারিক বলেন, গ্যাংটি বাংলাদেশ ও নেপাল থেকে অপারেট করে। জাল নোট ছড়িয়ে দেশের অর্থনীতিকে ভেঙে ফেলার চক্রান্তে জড়িত ধৃতরা। আরও কয়েকজন এই চক্রের সঙ্গে জড়িত। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ ও নেপালেরও কয়েকজন রয়েছে। তাদের ধরার প্রক্রিয়া চলছে।